পেকুয়ায় আ’লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ১২, অর্ধশত রাউন্ড গুলিবর্ষণ : ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, বিজিবি মোতায়েন

Pekua Pic 27-10-2013.psd

এ.এম.জুবাইদ,পেকুয়া:
কক্সবাজারের পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়ন বিএনপি – আ’লীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আ’লীগের ক্যাডার বাহিনীর অর্ধশত রাউন্ড গুলিবর্ষণে এক শিশু গুলিবিদ্ধসহ ১২ ব্যাক্তি গুরুত্বর আহত হয়েছে। আহতদের পেকুয়া সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদূর্শীসূত্রে জানা যায়, নিদলীয় নিরপক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে কেন্দ্রীয় ঘোষিত ৬০ ঘন্টা হরতালের প্রথমদিন ২৭ অক্টোবর সকাল ১১ টায় উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের সবুজবাজারস্থ ইউনিয়ন বি এন পির কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করে। এসময় রাজাখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউনিয়ন কৃষকলীগের সেক্রেটারী সাইফুল্লাহ মোটরসাইকেলযোগে বি এন পির দলীয় কার্যালয়ে সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বি এন পির নেতাকর্মীরা তাকে বাধা দিলে সাইফুল্লাহ ফিরে গিয়ে আ’লীগ নেতা স্থানীয় চেয়ারম্যান বাবুল সিকদারসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে বি এন পির অফিসে গিয়ে সশস্ত্র হামলা চালালে পথচারী, এক শিশুসহ ৯ ব্যাক্তি গুলিবিদ্ধ হয়। আহতরা হলেন ছোট শিশু মিন্টু, ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি জাহাঙ্গীর, বি এন পি কর্মী আনসার, বাবুল, এনাম, রেজাউল, নেজাম, ফোরকান, জসিম, রিদুয়ান। পরে বি এন পির নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে সবুজবাজার এলাকায় আ’লীগ কর্মীদের উপর পাল্টা হামলা করলে জাকের নামে এক ব্যাক্তি আহত হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও আহতরা জানান চেয়ারম্যান বাবুল সিকদার, রিয়াজু, পারভেজ, নাছির, কালা মানিক, ডাকাত ওবাইদুল, নুরমোহাম্মদ, আসহাব, জহির, জাকের প্রকাশ্যে রাস্তায় এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে। চেয়ারম্যান বাবুল টাওয়ারের উপরে উঠে গুলি চালায়।

খবর পেয়ে পেকুয়া থানার ওসি মাঈনউদ্দিন আহম্মদ পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে উভয় পক্ষ কে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আনে। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান বাবুল সিকদারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ওনার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে অনেকবার চেষ্টা করার পরও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওযা যায়নি।

এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে ৬০ ঘন্টা হরতালের প্রথম দিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অপ্রীতিকর ঘটনাছাড়ায় পালিত হয়েছে। এদিকে সকাল ৯ টায় সদর ইউনিয়নের সাকুরপাড় এলাকায় হরতালের সমর্থনে উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহাছান উল্লার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। এছাড়াও সকাল থেকে পেকুয়ার প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে উপসড়কগুলোতে যানবাহন ছিল শূন্য পুরো পেকুয়ার প্রধান সড়ক উপসড়কগুলো ছিল রিক্সার দখলে। যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক, বীমা অফিস, সরকারী আধাসরকারী বেসরকারী প্রতিষ্টান প্রায় বন্ধ ছিল। সরকারী অফিস ও ব্যাংকে চোখে পড়ার মত লেনদেন হয়নি গ্রাহক ছিল সীমিত। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি মাঈন উদ্দিন আহম্মদ এ প্রতিবেদক কে জানান হরতাল কে কেন্দ্র করে রাজাখালী ইউনিয়নে আ’লীগ ও বি এন পির নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বি এন পি জামায়াতের নৈরাজ্য ও নাশকতা ঠিকাতে পুলিশ সবসময় প্রস্তুত আছে।
      
১৪৪ ধারা জারি প্রত্যাহার ॥ বিজিবি মোতায়ন 
পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি প্রত্যাহার করে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ১৪৪ ধারা জারির আদেশ প্রত্যাহার করে নিলেও বিজিবি মোতায়ন রয়েছে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার অফিসসূত্রে জানা যায়, গত ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ৭ টায় ২৫ অক্টোবর বি এন পি ও আ’লীগের পক্ষ থেকে পেকুয়া কবির আহমদ চৌং বাজারে সমাবেশ করার ঘোষনায় উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা দেখে উপজেলা নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রষ্ট মীর শওকত হোসেন পেকুয়া বাজার এলাকায় অনিদিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেন। পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে ওই আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রষ্ট ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মীর শওকত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পেকুয়া বাজার এলাকায় অনিদিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি একটু শাস্ত হওয়ায় ১৪৪ ধারা জারি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন