parbattanews

পেকুয়ায় কুতুবদিয়া চ্যানেলে বিলীন হচ্ছে মগনামা জেটিঘাট, বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ আসছে ১০০ কোটি টাকা

এম.জুবাইদ, পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়ায় কুতুবদিয়া চ্যানেলে সাগর গর্ভে বিলীন হচ্ছে মগনামা জেটিঘাট। গত দেড় যুগ ধরে বেড়িবাধ সংস্কার না হওয়ায় উপজেলার উপকুলের মগনামা ইউনিয়নের সবচেয়ে ব্যস্ততম জেটিঘাট এর অস্থিত্ব চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে।

এদিকে মগনামাসহ পেকুয়া উপজেলার উপকুলবর্তী চার ইউনিয়নের বিধ্বস্ত বেড়িবাধ সংস্কারের জন্য ১০০ কোটি টাকার প্যাকেজ আসছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বেড়িবাধের নির্মাণ কাজ আরম্ভ করতে এর ব্যয় নির্ধারণ করে ওই অর্থ দিয়ে পেকুয়া, মগনামা, রাজাখালী ও উজানটিয়া ইউনিয়নের বাধ সংস্কার করবে। দায়িত্বশীল সুত্র নিশ্চিত করেছে, অধিক টেকসই ও সু-প্রশস্ত বেড়িবাধ সংস্কারের জন্য সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) ওই কাজের তদারকি করবেন।

জানা গেছে, চলতি বছরের শেষ অথবা আগামী ২০১৬সালের শুরুতেই শুষ্ক মৌসুমে বাধ সংস্কারের কাজ আরম্ভ করা হবে। দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় ওই কাজের মধ্যে প্রথম ধাপে মাটি ভরাট করা হবে বেড়িবাধে। এছাড়া মাটির ক্ষয় রোধ করতে সেখানে উচ্চ প্রযুক্তির মাধ্যমে মাটি কনফেকশন করার কাজও থাকবে। একই সাথে সমুদ্রের প্রচন্ড ঢেউ থেকে বেড়িবাধ সুরক্ষিত করতে বেড়িবাধের বাহির অংশে দেয়া হবে গাইড ওয়াল। পাথরের কংক্রিট ও লোহার নির্মাণ শৈলীতে ওই গাইড ওয়াল বেড়িবাধের জন্য প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া শিরার পর বেড়িবাধের বাহির অংশের স্লোপে বিছানো হবে জিও টেক্সটাইল। সমুদ্রের অববাহিকা অংশের ঝুকিপুর্ণ স্থানে গাইডওয়াল, জিও টেক্স ছাড়াও প্রতিরোধক হিসেবে দেয়া হবে ঢালাই।

জানা গেছে, মগনামা ইউনিয়নের উত্তরের শরৎঘোনা থেকে কাকপাড়া হয়ে প্রায় ৮কি.মি. বেড়িবাধ সংস্কার কাজ এ আওতায় আসছে। অপরদিকে ঘোষালপাড়া থেকে মিয়াজি পাড়া হয়ে উজানটিয়া ইউনিয়নের মাতামুহুরী নদীর অংশ পর্যন্ত প্রায় ৭কি.মি. বেড়িবাধ সংস্কার করা হবে। একইভাবে রাজাখালী ইউনিয়নের ভোলা নদীর মোহনা থেকে বখশিয়াঘোনা হয়ে মাতব্বরপাড়া পর্যন্ত বেড়িবাধ সংস্কার করা হবে। উজানটিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদিয়ার পূর্ব অংশ ও পশ্চিমাংশের মাতারবাড়ী চ্যানেলে ঝুকিপুর্ণ বেড়িবাধ অংশ ওই বরাদ্দ থেকে সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সিরাদিয়া থেকে মেহেরনামা গুরামিয়া চৌধুরী বাজার হয়ে সৈকতপাড়া পর্যন্ত বিস্তৃত বেড়িবাধ সংস্কার হবে এ বরাদ্দ থেকে এর সংস্কার কাজও করা হবে।

দায়িত্বশীল সুত্র জানিয়েছেন, পেকুয়াসহ উপকুলের ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাধ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (একনেক) বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। বেড়িবাধের সংস্কার কাজ বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে টেকনিক্যাল সব কাজ শেষ করা হয়েছে।

গত কয়েকদিন আগে বেড়িবাধ পরিদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ পাউবোর সমন্বয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল পেকুয়া সফর করেছেন। ওই দলে দাতা সংস্থাসহ বৈদেশিক কিছু কুটনৈতিকও ছিল বলে জানাগেছে। তারা রাজাখালী, মগনামা, পেকুয়া সদর ও উজানটিয়া ইউনিয়নের বেড়িবাধ স্থানে গিয়েছেন।

জানা গেছে আধুনিক ও অধিকতর টেকসই বাধ নির্মানের জন্য কারিগরি সহায়তা দিচ্ছেন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ জাপান। জাপানের অন্যতম অর্থ সহায়তা প্রতিষ্টান জাইকা বাধ সংস্কারের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে টাকা দিতে সম্মত হয়েছে। জাইকা ও দেশীয় অর্থ থেকে এ টাকার বেড়িবাধ নির্মান কাজে টাকার জোগান দেবে।

Exit mobile version