পেকুয়ায় গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ায় নিশাত মনি (২২) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পাষন্ড স্বামীর বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১৬জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ধনিয়া কাটা এলাকার লাইনের শিরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত গৃহবধূর স্বামী সেলিমকে আটক করেছে।

নিহত গৃহবধূ কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের আব্দু শুক্কুরের মেয়ে ও একই এলাকার সেলিম উদ্দিনের স্ত্রী বলে জানা যায়। নিহত গৃহবধূ এক সন্তানের জননী।

নিহত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিগত আড়াই বছর আগে পারিবারিকভাবে নিশাত মনির সাথে সেলিম উদ্দিনের বিয়ে হয়। কয়েক বছর বেশ ভালোই কাটছিলো তাঁদের সংসার। স্বামী সেলিম উদ্দিনের কাজের সুবিধার্তে স্ত্রীকে নিয়ে পেকুয়ায় এসে ঘর সংসার শুরু করে। সেখানেও ভালো যাচ্ছিলো তাদের সংসার। স্ত্রীকে বিবাহের সময় দেওয়া সব স্বার্ণালংকার স্বামী সেলিম উদ্দিন বিক্রি করে দেয়। শেষ সম্বল হিসেবে রইলো একজোড়া কানের দুল। যৌতুকের জন্য দীর্ঘ দিন নিশা মনিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। শ্বশুর বাড়ি থেকে একাধিক বার যৌতুকের টাকাও দেওয়া হয়েছে স্বামী সেলিম উদ্দিনকে।
সর্বশেষ শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে পুনরায় যৌতুকের টাকার জন্য মারধর শুরু করে। নিশাত মনি সকাল ৭টার দিকে নির্যাতনে অসহ্য হয়ে মা হাসনেয়ারাকে ফোন করে। মেয়ের মা ও পরিবারের লোকজন আসতে আসতেই ঘাতক স্বামী ও তাঁর এক বন্ধুর শারীরিক অত্যাচারে প্রাণ হারায় গৃহবধূ নিশা মনি। পরে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে।

নিহত গৃহবধূর মা হাসনেয়ারা কান্না জর্জরিত কন্ঠে বলেন, নিশাত মনি আমার এক মাত্র মেয়ে, আড়াই বছর আগে সেলিমের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। দীর্ঘ দিন ধরে যৌতুকের টাকার জন্য নিশাত মনিকে শারীরিক নির্যাতন করে যাচ্ছে সেলিম উদ্দিন। একাধিক বার টাকাও দিয়েছি। যখন যা চেয়েছে সব দিয়েছি। সর্বশেষ শুক্রবার সকালে সেলিম উদ্দিন ও তাঁর এক বন্ধু মিলে আমার মেয়ের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তাঁদের মারধরের এক পর্যায়ে নিশাত মনির মৃত্যু হয়। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া জন্য মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাচ্ছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী সেলিম উদ্দিনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা তদন্ত করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন