parbattanews

পেকুয়ায় জায়গা জমির বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে মহিলাসহ গুলিবিদ্ধ ৪

pekua-pic-21-10-2016

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জায়গা জমির বিরোধের জের ধরে আপন ভাই বোনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়।

জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০ টায় পেকুয়ার বারবাকিয়া বোধামাঝির ঘোনা এলাকার আবদু রশিদে পুত্র সেকান্দও ও ভগ্নিপতি মোস্তাক এর মধ্যে পৈত্রিক জায়গা জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি সেকান্দার তার আপন বোনদের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য নানা ভাবে পায়তারা করে আসছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন ১৯৭৭ -৭৮ সালে ভগ্নিপতি মোস্তাক আহমদ এর নামে বসতবাড়ীর সন্নিকটে ৩ কানি খাস জমি বন্দোবস্তি করে দেন। যার বন্দোবস্তি মামলা নং ১২৭১/১৯৭৭-৭৮। খতিয়ান ১৩৭৬। পরে ২০০২ সালে বন্দোবস্তি মামলামূলে বি এস রেকর্ড করার জন্য মোস্তাক আহমদ বিজ্ঞ আদালতে দারস্ত হন। যার মামলা নং অপর ২২৫/০২। বন্দোবস্তিমূলে রেকর্ড এর মালিক ভগ্নিপতি মোস্তাক আহমদ তার শশুরের দেওয়া জায়গা ৩ ভাই ৪ বোনের মাঝে বন্টন করার উদ্যোগ নেয় এবং জায়গা সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করে সকল ওয়ারিশদের বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বৈঠক করেন। কিন্তু ভাই সেকান্দর উক্ত জায়গার উপর বোনদের কোন ভাবে দাবী দাওয়া নেই বলে বৈঠক না মেনে উঠে যান। পরে বিষয়টি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়।

বারবাকিয়া গ্রাম আদালতে ২০১২, পরে পেকুয়া থানায় ২০১৪, ২০১৬ মামলা করলেও সে উপস্থিত না থাকায় মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয় নাই। এ সব বিষয় নিয়ে মোস্তাক আহমদ বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জামাল হোছাইন, নুরুল আবচার, সেকান্দর, আব্দু রহিমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। যার নং সি আর ১১১। এ মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। উক্ত মামলা গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করায় বিবাদীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

ঘটনার দিন সকালে একই এলাকার আব্দু রহিমের পুত্র মোস্তাফিজ, মোকাদেসের পুত্র জামাল, মোকাদেসের পুত্র আবুল হাসেম, সেকান্দরের পুত্র আবদু রহিম, আব্দুল গফুর, রমিজের পুত্র আনচার, মামুন, ছাবের পুত্র নুরনবী, বাহাদুর, আবদু রশিদের পুত্র সেকান্দর এর নেতৃত্বে আরো কয়েকজন অস্ত্র স্বস্ত্র সজ্জিত হয়ে আপন বোন মৃত আহমদ নূরের স্ত্রী সাইরা বেগম(৪০), তার চাচা আবু তাহের (৪৫), বশির (৫০) ও বশিরের ছেলে মানিক(২৯) আরো কয়েকজনের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। এছাড়া আরো ৮ জন গুরুত্বর আহত হয় এরা হলেন শাকের(৩০), মাসুদ(২৮), আজম উদ্দিন(৩২), কাশেম(৩৫), গোলাম বারী (৫০), পাখি(২৮)। আহতদের কে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে পেকুয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতদের অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত ডাক্তার গুলিবিদ্ধ ৪ জনকে চমেকে প্রেরণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শী সাবিনা আকতার জানান, আমার মা পিতার জায়গার উপর বসতঘর ও আরো কিছু নাল জমি নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। এ জায়গা থেকে উচ্ছেদ করতে দীর্ঘদিন ধরে আমারা মামা সেকান্দর চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাসহ আরো কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। তাদের সবার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। ঘটনার দিন সকালে মামার নেতৃত্বে তার সন্তানরা মিলে অবৈধ অস্ত্রসহ আমাদের পরিবারের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় মাসহ চাচারা গুলিবিদ্ধ হয়ে বর্তমানে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার মধ্যে মায়ের অবস্থা গুরুতর।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভূঁইয়া জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version