parbattanews

পেকুয়ায় বিষ প্রয়োগে মাছ ও পেঁপে বাগান নিধন

পেকুয়া প্রতিনিধি:

পেকুয়ায় বিষ প্রয়োগে পুকুরে মাছ ও পেঁপে বাগান নিধন করা হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গভীর রাতে ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত খামারীর পুকুরে কীটনাশক প্রয়োগ করে এবং পেঁপে বাগানে লবণ প্রয়োগ করে। এ সময় পুকুর পাড়ে সৃজিত বিপুল পরিমান পেঁপে গাছও নিধন করে তারা।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১২ জুলাই) দিবাগত রাতে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ভেলুয়ারপাড়া এলাকায়।

ভুক্তভোগী পরিবার জানান, ঘটনার পর দিন সকালে পুকুরে দেখা যায় বিপুল পরিমান মাছ পানিতে ভেসে ওঠে।

প্রাপ্ত সূত্র জানায়, ভেলুয়ারপাড়া এলাকার আশরাফ জামানের ছেলে তোফাইল উদ্দিন নামের এক যুবক দুটি পুকুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ চাষ করেন। ৩৬ শতক জমিতে পুকুর ২ টিতে তোফাইল চলতি বর্ষা মৌসুমে তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছের ৪০ হাজার পোনা অবমুক্ত করেন। প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের তেলাপিয়া চাষে ওই যুবক পরিচর্যাসহ বিপুল অর্থ ব্যয় করেন। বর্তমানে পুকুরে মাছ পরিপক্ক হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, ওই দিন রাতে একদল দুর্বৃত্ত পুকুরে হানা দেয়। এ সময় পুকুর পাড়ে সৃজিত পেঁপে বাগানে লবণ প্রয়োগ করে। লবণ প্রয়োগের ফলে বেশ কিছু পেঁপে গাছ লালচে বিবর্ণ হয়ে মারা যায়।

তোফাইল জানায়, সকালে পুকুরে প্রায় ৫ মণের অধিক মাছ মারা গিয়ে ভেসে উঠেছিল। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। কীটনাশকের একটি বোতল পুকুর পাড়ে পেয়েছি। নাইট্রো নামক কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে। মৎস্য অফিসের সাথে পরামর্শ করেছি। তাৎক্ষণিক পানিতে অক্সিজেন প্রয়োগ করেছি। একটি মুরগী ওই মারা যাওয়া মাছ খেয়ে মারা যায়।

তোফাইল আহমদের স্ত্রী পারভীন আক্তার জানায়, শত্রুতামূলক বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। স্বামী জায়গা ক্রয় করে ওই স্থানে পুকুর খনন করছিল। বেকারত্ব দূরীভূত করতে মাছ চাষ ও পুকুর পাড়ে পেঁপে চাষসহ সবজি চাষ করছিলেন। আমার স্বামীর প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি সাধন হয়েছে। এমনকি আমার ছেলেদের স্কুলে যাওয়া আসার সময় মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে তারা।

তবে পারভীন আক্তার জানায়, প্রতিবেশী প্রবাসী ইউনুছ ও কামালের ইশরায় আবু জাফরের ছেলে রুহুল কাদের, আবদু সালামের ছেলে জমির উদ্দিন, আজিজুর রহমানের ছেলে জাবেদ করিম গং ও তোফাইলের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একাধিক মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। আমার স্বামীকে হত্যার করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। টাকা নিয়ে কিলার ঠিক করা হয়েছিল। বিকাশে ৩০ হাজার টাকায় কন্ট্যাকে যায়। সেটি পরবর্তীতে প্রকাশও পায়। লেনদেনের ফুটেজ সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত অংশ সংরক্ষিত আছে।

তিনি জানান, প্রবাসী ইউনুছের পাঠানো টাকা জমির উদ্দিন নিয়েছে সেটা সিসি ক্যামরায় ধারণ আছে।

এ ঘটনারর সত্যতা স্বীকার করেন আবদু সালাম, তার স্ত্রী খতিজা বেগম, মৃত মোজাহের আহমদের পুত্র আবুল বশর।

তোফাইল উদ্দিন জানান, এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেন আমারা কোন সময় কোথায় যাচ্ছি, কি করছি সে সম্পর্কে তথ্য জমির উদ্দিনকে জানাত। আমাকে হত্যা করতে না পারায় সর্বশেষে আমার মৎস্য প্রজেক্টে বিষ প্রয়োগ ও পেঁপে বাগানে লবণ দিয়ে নিধন করল।

আামার প্রতিপক্ষগণ আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে যে পরিকল্পনা করছিল তার সত্যতা স্বীকার করে এলাকার গণ্যমান্য শতাধিক লোকজন গণস্বাক্ষর প্রদান করেন।

তিনি আরও জানান, বিষ প্রয়োগকারীকে আমি রাত সাড়ে ১০টার দিকে দেখেছি। তদন্তের স্বার্থে নামগুলো গোপন রাখা হল।

এ ব্যাপারে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী জানায়, আসলে বিষয়টি আমি গভীরভাবে মুল্যায়ণ ও যাচাই বাছাই করছি। আমি সকালে শুনেছি। যাওয়ার কথা ছিল। ব্যস্ততায় যাওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার এএসআই লুৎফর রহমান জানান, ঘটনাস্থল আমি পরিদর্শন করেছি। ঘটনাটি আমি বাস্তবে ও ভিডিওতে দেখলাম। ঘটনাটি খুবই অমানবিক। আমি পরিদর্শন করার সময় অনেক মাছ মরা দেখেছি। মানুষ হিসেবে এ কাজ করতে পারে না। আমি তাকে মামলা করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেছি।

Exit mobile version