পেকুয়ায় মুমূর্ষু এক যুবকের মৃত্যু, লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়েছে স্বজনরা

fec-image

পেকুয়ায় মোস্তাক আহমদ (৪২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হলে লাশ হাসপাতালে রেখে আত্মীয় পরিচয়দানকারীরা পালিয়ে যায়। প্রায় দুই ঘন্টা পরে আপন ভাইবোনেরা এসে হাসপাতাল থেকে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়।

শুক্রবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৭.৩০টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের সুতাচুড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মোস্তাক আহমদ মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যাঘোনা এলাকার মৃত.আমির হোসেনের পুত্র। পেকুয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ সময় মোস্তাকের স্ত্রী রমিজা খাতুন (৪০) ও মেয়ে উম্মে সাদিয়া (১৯) কে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু এনিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে মানুষের মুখে মুখে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন মোস্তাক আহমদের একাধিক স্ত্রী রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে দক্ষিণ সুতাচুরা নির্জন বিলে মোস্তাক আহমদকে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তারা। এ সময় সে গুঙ্গারামী করছিল। নাকে মুখে ফেনা বের হচ্ছিল। মুখ দিয়ে বিষের গন্ধ বের হচ্ছে। প্রথমে আমরা আমাদের এলাকার জনৈক পাগল লোক ভেবেছিলাম। কাছে গিয়ে দেখি এলাকার জামাই মোস্তাক আহমদ।

উজানটিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ কামাল হোসেন জানায়, খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যাই। দেখি এলাকার জামাই মোস্তাক। তার বাড়ি মগনামা। মগনামার পরিষদের দফাদার আলমগীরকে ফোন করে বিষয়টি অবগত করি। মোস্তাকের স্বজনরা এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

দফাদার আলমগীর জানায়, গ্রাম পুলিশ কামালের মুঠোফোন পেয়ে মোস্তাকের বোন নুরতাজকে খবরটি জানাই। শুনেছি বৃহষ্পতিবার বিকেলে সে বোনের বাড়ি থেকে বের হয়। সে একাধিক বিয়ে করেছে। মাঝে মধ্যে স্বজনদের বাড়িতে আসতো।

উজানটিয়ার গুদারপাড়া স্টেশনের কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, রাতে মোস্তাককে স্টেশনে ঘুরাফেরা করতে দেখেছি। ধারণা করা হচ্ছে তার স্ত্রীর কাছে এসেছে।

গুদারপাড়া স্থানীয়রা জানায়, মাস তিনেক পর পর মোস্তাক স্ত্রীর কাছে আসতো। অনেক সময় এক বছর পরেও আসতো। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা অবনতি আছে। তবে মৃত্যুর বিষয় নিয়ে তারা কোনকিছু বুঝে উঠতে পারছেনা।

উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মোস্তাক আহমদ আমাদের এলাকার জামাই। বিলে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে শুনেছি। রহস্য কি আসলে বুঝতে পারছিনা। পুলিশ এসেছিল।

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক মোজাম্মেক হক জানায়, হাসপাতালে আসার আগে মারা গেছে। মুখে বিষের গন্ধ পাওয়া গেছে। তবে কোন আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার জানায়, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। কাউকে আটক করা হয়নি। মা মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর আগে মোস্তাক আহমদের সাথে উজানটিয়া ইউনিয়নের গুদারপাড়া এলাকার মৃত.নুরুজ্জামানের মেয়ে রমিজা খাতুনের বিয়ে হয়। রমিজা খাতুনের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। মোস্তাক আহমদের এটি তৃতীয় বিয়ে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন