পেকুয়ায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত : কর্মসূচী দিচ্ছে আ’লীগ

নির্বাচন-পরবর্তী-সহিংসতা

নিজস্ব প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি দিন দিন উত্তপ্ত হতে চলছে। ৩১ মার্চ ইউপি নির্বাচনে পেকুয়া জি এম সি ইনষ্টিটিউশন কেন্দ্রে ভোট গ্রহনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বিজিবি ও পুলিশ সদস্যারা তাকে ভোট কেন্দ্রে নিমর্ম ও নিষ্টুরভাবে শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে গুরুতর আহত করে। হাজার হাজার মানুষের সামনে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এ ছাত্র নেতাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা ব্যাপক লাঠিচার্জ করে।পরে রক্তাক্ত মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা পুলিশের ভ্যানযোগে থানায় নিয়ে আটকে রাখে।

ওই ঘটনার জের ধরে পেকুয়ায় উত্তপ্ত হতে চলছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। খোদ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ বেশকিছু দলীয় নেতাকর্মী ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগ। তারা এঘটনাকে নিষ্টুর বর্বরতা বলে অভিহিত করছেন।

সোমবার আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের যৌথ উদ্যেগে পেকুয়ার দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরী সভা আহ্বান অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে অনুষ্টিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাষ্টার আজমগীর চৌধুরী। সভায় ৩১মার্চ নির্বাচনের দিন সৃষ্ট ঘটনাকে বিএনপি-জামাতের পরিকল্পিত ঘটনা আখ্যায়িত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা।

সভায় বক্তারা বলেন, সেদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা ন্যাক্কারজনক ঘটনার অবতারণা করেছেন। আ.লীগ সম্পাদক পেকুয়া জিএমসি ইনষ্টিটিউশন কেন্দ্রে নিজের ভোট প্রয়োগের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে অদৃশ্য ক্ষমতাধর ব্যক্তির ইশারায় নিষ্টুরভাবে পিঠিয়ে আহত করা হয়েছে। পেকুয়ার পুলিশ প্রশাসন ভোট কেন্দ্রে বিএনপি-জামাতের পক্ষে সরাসরি কাজ করেছে। ভোট গ্রহনের এক ঘন্টার মধ্যে সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে এবিসি আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা লাঠিচার্জ করে। এসময় এর নিকট শতাধিক বিএনপি-জামাতের ক্যাডাররাও অবস্থান নেয়। তাকে হামলার কৌশল ছিল পেকুয়ায় ভোট গ্রহনে সব ইউনিয়নে আ.লীগকে দুর্বল করা। পরে নির্যাতনের এ দৃশ্য বিএনপি জামাতের লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়।

বক্তারা আরও বলেন, সরকার দলের একজন সাধারণ সম্পাদক অথচ তাকে যেভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে তা মেনে নেয়া যায় না। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবিধানে কোন ব্যক্তিকে শারিরীক নির্যাতন করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তারা মানুষের সাথে এমন বর্বরোচিত আচরন করতে পারেন না।

তারা অভিযোগ করেন, নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এরা সবাই ছিল বিএনপি-জামাতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। মগনামা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী খাইরুল এনামকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা লাঠিচার্জ করেছে। রাজাখালীতে নৌকার এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকেও একটি ভোট কেন্দ্রে লাঠিচার্জ করে আহত করা হয়েছে। বারবাকিয়ায় ৩০৯ ভোট বাতিল গণ্য দেখিয়ে নৌকার প্রার্থী জি.এম আবুল কাশেমের পরাজয় নিশ্চিত করে। শিলখালী ও সদর ইউনিয়নে বহু ভোট কেন্দ্র থেকে নৌকার এজেন্ট বের করে দিয়ে ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তারা ও বিএনপি জামাতের লোকজন সিল মেরে ব্যালট ঢুকিয়ে দেয় বাক্সে। আমরা অবিলম্বে এ ৫ ইউনিয়নের পুনরায় ভোট গ্রহন চাই। সাধারণ সম্পাদকসহ যেসব নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে এর প্রতিফলন না ঘটলে আওয়ামীলীগ পেকুয়ায় কঠোর কর্মসুচী ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পেকুয়া সদর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আজম খান, সম্পাদক বেলাল উদ্দিন, বারবাকিয়ার সম্পাদক কামাল হোসেন, মগনামার সম্পাদক রশিদ আহমদ, উজানটিয়ার সভাপতি তোফাজ্জল করিম, জেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি নুরুল আবছার, উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক মো.বারেক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ওসমান গনি, বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম হিরু, সম্পাদক মো.ফারুক প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন