parbattanews

পেকুয়ায় শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো শারদীয় দুর্গাপূজা। আর মাত্র দুইদিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ বড় উৎসব। এজন্য প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কক্সবাজারের পেকুয়ার প্রতিমা শিল্পীরা।

জানা যায়, ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে পূজা শেষ হবে ২৪ অক্টোবর। সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী ২০ অক্টোবর পালিত হবে মহাষষ্ঠী, ২২ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, মহানবমী পালিত হবে ২৩ অক্টোবর। বিজয়া দশমী পালিত হবে ২৪ অক্টোবর।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসাবে পেকুয়ার পূজারী ও প্রতিমা নির্মাতাদের দিনরাত পরিশ্রম করে প্রতিমা সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে।

গতকাল সরেজমিনে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা হচ্ছে দেবীদুর্গার প্রতিমা। কারিগররা প্রতিমা তৈরি রং করতে পুরোদমে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিমা তৈরির শিল্পীরা মাটির কাজ শেষে রংয়ের কাজ শেষ করছে প্রায়ই। আবার অনেক মণ্ডপে রঙয়ের কাজ শেষ করছে শিল্পীরা। চলছে সাজসজ্জা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজও।

এদিকে সম্প্রতি পূজার প্রস্তুতি নিয়ে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসন সকল পুজামণ্ডপের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভাও করেছেন। বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা এবং পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার।

জানা যায়, উপজেলার ৩টি ইউপিতে মোট ৯টি মণ্ডপে পূজার প্রতিমা সজ্জিত করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ৯টি মণ্ডপের মধ্যে ৬টি দুর্গা পূজা ও ৩টি ঘট পূজা। শিলখালী ইউপিতে ২টি দুর্গাপূজা, বারবাকিয়া ইউপিতে ২টি দুর্গাপূজা, ১টি ঘট পূজা, পেকুয়া সদর ইউপিতে ২টি দুর্গাপূজা ২টি ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

আয়োজিত মণ্ডপগুলোর মধ্যে শিলখালী শিলপাড়া সার্বজনীন হঁরি মন্দিরে দুর্গাপূজা। শিলখালী শিলপাড়া বিষ্ণু মন্দিরে দুর্গাপূজা। বারবাকিয়া ইউনিয়নে শ্রী শ্রী লোকনাথ বাবার মন্দিরে দুর্গাপূজা, বারবাকিয়া ইউনিয়নে উত্তর নাথ পাড়া হরি মন্দিরে দুর্গাপূজা। বারবাকিয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে ঘট পূজা। পেকুয়া সদর কেন্দ্রীয় সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে দুর্গাপূজা। পেকুয়া সুশীল পাড়া সার্বজনীন মন্দিরে দুর্গাপূজা। ডাক্তার রনধীর বিশ্বাস এর বাড়ি ঘট পূজা। শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির বিশ্বাস পাড়া,পেকুয়ায় ঘট পূজা।

পেকুয়া উপজেলা পূজা উদযান পরিষদের সভাপতি সুমন বিশ্বাস বলেন, দুর্গাপূজার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হিন্দুদের কিন্তু মূলবাণী সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে নিবেদিত। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক চেতনা। অর্থাৎ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে সর্বজনীন শারদীয় দূর্গাপূজা। সব মানুষের সুখ-শান্তি কামনায় এবং সর্বজীবের মঙ্গলার্থে হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসব মুখর পরিবেশে নানা উপচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে প্রতিবছর উদযাপন করে থাকে শারদীয় দুর্গোৎসব। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর হায়দার বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য থানার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আশা করছি আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গোৎসব হবে। সবাই যাতে দুর্গাপূজা স্বতঃস্ফুর্তভাবে উদযাপন করতে পারে ও দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে করতে পূজামণ্ডপে পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়ন থাকবে। এছাড়াও সকল পূজামণ্ডবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। সিসিটিভির আওতায় এনে সকল পূজামণ্ডবে কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

Exit mobile version