parbattanews

পেকুয়ায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে স্বামী-স্ত্রীর আহত, হামলার ভয়ে ঘরছাড়া পরিবার

ছবি: ভুক্তভোগী পরিবার।

কক্সবাজারের পেকুয়ায় ছুরিকাঘাতে স্বামী-স্ত্রী আহত হয়েছে। এ ঘটনার জের ধরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হুমকি ও প্রাণনাশের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়েছে প্রবাসী পরিবারটি। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বুধবার (৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণসুন্দরীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, ওই এলাকার মৃত হাজী আবদুল গণির ছেলে আক্তার হোসেন (৫০), স্ত্রী মিনা আক্তার (৪৭)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই দিন রাত ৯টার দিকে আক্তার হোসেন সুন্দরীপাড়ায় রাস্তা দিয়ে হেটে লবণ মাঠে যাচ্ছিলো। এ সময় পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা একদল দুবৃর্ত্তরা আক্তার হোসেনের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে তারা তাকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আক্তার হোসেন আর্তচিৎকারে স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী মিনা আক্তার ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় দুবৃর্ত্তরা আক্তার হোসেন ও তার স্ত্রীকে মাথায় ছুরিকাঘাত করে।

উল্লেখ্য যে বসতভিটা নিয়ে আক্তার হোসেন ও প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম গংদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে গত ৫ দিনের ব্যবধানে তিন দফা হামলা ও ভাংচুরসহ লুটপাট হয়েছে। নুরুল ইসলাম গং ভাড়াটে লোকজনসহ গত রবিবার সকাল ৯টার দিকে আক্তার হোসেনের বাড়িতে তান্ডব চালায়। এ সময় ওই বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মালামাল লুট করে। ওই দিন হামলায় আক্তার হোসেনের স্ত্রী মিনা আক্তার আহত হন। পরের দিন রাতে হামলাকারীরা ফের আক্তার হোসেনের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্তার হোসেনের পরিবারকে বসতবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। প্রাণনাশ ভয়ে আক্তার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা ওই দিন রাতে স্থানীয় ইউপির ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য সাদেকার বাড়িতে আশ্রয় নেন। হামলার শিকার পরিবার ওই দিন ট্রিপল নাইনে ফোন দেয়। পরে পেকুয়া থানার এএসআই আবদুল হেকিমসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স রাতে সেখানে পৌঁছেন। পরিস্থিতি আচ পেয়ে পুলিশ নিজেরাই ওই পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য ইউপি সদস্যের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেন। এর দুইদিন পর রাতে আক্তার হোসেন ইউপি সদস্য সাদেকার বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তার দিকে আসার পথেই হামলার শিকার হন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আক্তার হোসেনের পরিবার পার্শ্ববর্তী ইউপি সদস্য সাদেকার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

এ ব্যাপারে আক্তার হোসেনের স্ত্রী মিনা আক্তার বলেন, আমরা দফায় দফায় হামলার শিকার হচ্ছি। দুই দিনের মধ্যে আমি ও আমার স্বামী দুই দফা হামলার শিকার হয়েছি। আমার বাড়িতে এখন কেউ নেই। রাতে সন্ত্রাসীরা গিয়ে আমাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তিন দিন ধরে মহিলা মেম্বারের বাড়িতে আছি। আমার পুত্রবধূকেও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ১০ম শ্রেণির আমার এক মেয়েকেও কিল, ঘুষি মেরেছে। আমার ছেলে শাকের উল্লাহকে রাস্তায় বের হলে প্রাণে মেরে ফেলবে। ইউপি সদস্য সাদেকা জানান, তারা আমার বাড়িতে আছে। রাতে এসে সন্ত্রাসীরা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। পুলিশও বলেছে আমার বাড়িতে থাকার জন্য।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি ওমর হায়দার জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মেম্বারের সাথেও কথা হয়েছে। একজন এসআইকে এর তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version