parbattanews

পেকুয়ায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের প্রধান সহকারী অফিস করেন সপ্তাহে দু’দিন

অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

পেকুয়ায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের প্রধান সহকারী ধনরঞ্জয় দাশ অফিসে আসেন সপ্তাহে মাত্র দু’দিন। অধিকাংশ সময় অফিসের বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রন করেন সব কাজ। ঘুষ, দুর্নীতি ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ধনরঞ্জয় দাশের আচার-আচরণ ও ক্ষমতার দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

এদিকে পেকুয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কেন্দ্রিক একটি দালাল সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। ধনরঞ্জয় এসব সিন্ডিকেট থেকে জমি রেজিস্ট্রি ও বায়নানামা সম্পাদনসহ রেজিস্ট্রি অফিসের দাপ্তরিক কাজে নেপত্য থেকে বিশেষ সুবিধা আদায় করে থাকে। সম্পত্তি হস্তান্তরকরণ সরাসরি সরকারের রাজস্বতে ব্যাংকের মাধ্যমে জমা হয়। কিন্তু ধনরঞ্জয়ের নেতৃত্বে ওই অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা মানুষকে জিম্মি করেছেন। দলিল ও জমি রেজিস্ট্রির সময় প্রতি লাখে এক হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন ঘুষ। এভাবে লাখ লাখ টাকা আদায় করছেন রেজিস্ট্রি অফিসের অন্তরালয়ে থেকে।

জানাগেছে পেকুয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সপ্তাহে বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিন রেজিস্ট্রি সম্পাদন হয়। চকরিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার প্রিয়তোষ কুমার দাশ পেকুয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। ধনরঞ্জয় দাশ মোহরার থেকে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন প্রধান সহকারী। পেকুয়ায় সপ্তাহে সবদিন তার অফিসে থাকার কথা। কিন্তু দু’দিন ছাড়া বাকি দিনগুলো কাটান চট্টগ্রামে। তার পরিবর্তে বিকাশ নামে একজন বহিরাগত লোক সব দেখাভাল করেন। রেকর্ড় রুমের চাবিও ওই ব্যক্তির হাতে। সেখান থেকে টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে সরবরাহ দেয়া হচ্ছে দলিলের কপিসহ প্রয়োজনীয় তথ্য। এমনকি দলিলের ছবি পাল্টিয়ে ওই দলিলে অন্যজনের সাংঘর্ষিক ছবি দিয়ে বেকায়দায় ফেলছেন মূল ব্যক্তিকে। এভাবে জিম্মি করে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেকুয়ার কয়েকজন দলিল লেখক অভিযোগ করে বলেন, ধনরঞ্জয় ওই অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। সেবা প্রার্থীরা তার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। ধনরঞ্জয় দাশ এখন কোটিপতি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চকরিয়া সোসাইটি কাচাবাজারে তার একটি নিজস্ব ৫তলা বিলাস বহুল ভবন আছে। যার আনুমানিক মূল্য দু’কোটি টাকা। এছাড়া তার নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ ও অর্থবিত্ত রয়েছে।

এদিকে ধনরঞ্জয় দাশ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে ঘুষের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত করায় পেকুয়ার সাব-রেজিস্টিার অফিসের খোদ কর্মচারীদের সাথে তার স্নায়ু বিরোধ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক কর্মচারী তার এ লাগামহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে মুখ খোলতে শুরু করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মচারী জানান ধনরঞ্জয় সবকিছুর অঘোষিত নিয়ন্ত্রক। তার কাছে কোন ধরনের মানবতা নেই। একজন বিবেকহীন লোক সে। সরকার থেকে বেতন নেন। অথচ কোন ধরনের সেবা তার কাছে নেই। শুধু টাকা আর টাকা। রাতে দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে অহরহ। দালালরা গ্রহিতা ও দাতাদের যেসব ঠকানো দলিল সম্পাদন করে ধনরঞ্জয়কে টাকা দিয়ে লোকচক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে রাতেই করে থাকে।

এ ব্যাপারে ধনাঞ্জয় দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি আনীত এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এসব তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। পেকুয়ার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত সাব-রেজিস্টিার প্রিয়তোষ কুমার দাশ এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।

Exit mobile version