পেকুয়ায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
পেকুয়া(কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। মৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হল বেলাল উদ্দিন (৩৭) নামের এক ব্যক্তি। গত সোমবার সকালে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: সাজেদুল করিম দীর্ঘ শুনানী শেষে মামলার এ রায় দেন। বেলাল উদ্দিন বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়াখালী এলাকার জাফর আহমদের পুত্র।
জানা গেছে বেলাল উদ্দিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শীলখালী ইউনিয়নের রায়ের ঘোনা এলাকার আকবর আহমদের মেয়ে ফাতেমা বেগম। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতে বার বার যৌতুকের কারণে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ নেমে আসে। বিভিন্ন সময় দু দফা ১২ হাজার টাকা যৌতুক দেয়ার পরও স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পাননি ফাতেমা। এক পর্যায়ে নির্যাতন সইতে না পেরে ফাতেমা বাবার বাড়িতে চলে যায়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে ফাতেমা বেগম কে স্বামীর বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়।ফিরিয়ে দেওয়ার এক মাসের মাথায় নির্মম ভাবে খুন হন ফাতেমা বেগম।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল আনুমানিক রাত ১ টায় স্বামী বেলাল উদ্দিন যৌতুকের কারণে স্ত্রী ফাতেমা বেগম কে নির্মম ভাবে খুন করে বাড়ির পার্শ্বে পুকুরে লাশ ফেলে দেয়। ঘটনার পর দিন ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান পেকুয়া থানা পুলিশ কে বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এদিকে আসামী নিদোর্ষ প্রমাণ করার জন্য স্ত্রী ফাতেমা মৃগী রোগী বলে থানায় একটি অপমৃত্যু দায়ের করে। তৎকালিন ওসির নেতৃত্বে তদন্ত করে ঘটনার গোমর ফাঁস হয়ে যায়। ঘটনার ২ মাস পর ফাতেমা বেগমের পিতা আকবর আহম্মদ বাদী হয়ে বেলাল উদ্দিন কে আসামী করে পেকুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১(ক) ধারা মোতাবেক আসামী বেলাল উদ্দিন কে দোর্ষী সাব্যস্ত করে তাকে মৃত্যুদন্ড (ফাঁসি) দন্ডিত করেন। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত বেলাল উদ্দিন কে গলায় ফাসি দিয়ে ঝুলিয়ে দন্ড কার্যকর করারও আদেশ প্রদান করেন। এছাড়াও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী বেলাল উদ্দিন এ রায়ের বিরুদ্ধে ৭ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। সরকার পক্ষের কৌশুলী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মো: নুরুল ইসলাম মামলার রায়ের বিষয়ে নিশ্চিত করেন।