parbattanews

পেকুয়া বাজারে সভা সমাবেশের উপর অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনের গণবিজ্ঞপ্তি জারি

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:
পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের প্রতিদিন অভ্যন্তরে অব্যহত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মহড়ার দেওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের মাঝে আতংক এবং লোকসানের কারণে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট ও দাবীর প্রেক্ষিতে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন বাজারে কোন ধরণের সভা সমাবেশ ও মিছিল না করার জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। ৮ মে সকালে পেকুয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রট মীর শওকত হোসেন পেকুয়া বাজারে গিয়ে জনসমুখে এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে পেকুয়া কবির আহমদ চৌধূরীর বাজারে সম্প্রতি সময় ধরে রাজনীতিক ইসুৎ নিয়ে বহিরাগত অস্ত্রধারীদের আনাগোনা সহ আ’লীগের দু গ্র“পের দ্বন্দ নিয়ে বাজারে অব্যাহত হামলা ব্যবসায়ীদের মাঝে আতংক বিরাজ করায় এবং ব্যবসায়ী ও ক্রেতাবিক্রেতাদের যানমালের রক্ষার্থে বাজার সীমানায় কোন ধরণের রাজনৈতিক সভা সমাবেশ ও মিছিল এবং বেশি লোকজন অবস্থান না করার জন্য অনির্দিষ্টকালের গণবিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়েছে। কেউ এ আদেশ অমান্য করে সভা সমাবেশ করলে তা অবৈধ বলে গণ্য করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করা হয়।

উল্লেখ যে গত ৭ মে পেকুয়া বাজারের হাজারো ব্যবসায়ীরা দোকান পাট বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজার থেকে পেকুয়া উপজেলার মানুষ ও অন্যান্য বাজারের ব্যবসায়ী ছাড়াও পার্শবর্তী উপজেলা কুতুবদিয়া, মাতারবাড়ি, বাঁশখালীর ব্যবসায়ী ও সাধারণ লোকজন তাদের নিত্য প্রয়োজনী সওদা করতে আসে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম বিশাল গরুর বাজার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় দেশের বহু জায়গা ও হাট থেকে সাপ্তাহিক সওদার দিন ছাড়াও নিত্যদিন গরু ছাগল বিক্রি হয়ে থাকায় অতিগরুত্বপুর্ণ বাজারটি বর্তমানে কয়েকজন সন্ত্রাসীর হাতে জিম্মি হয়ে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলেছে।

জানা যায়, ১ বৈশাখ থেকে বাজারের নতুন ইজারা বর্ষ শুরু হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের দুগ্রুপের মধ্যে বাজারের আধিপত্য নিতে দফায় দফায় সংঘর্ষের জেরধরে বাজারের ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে আসছে। উপকূলীয় অঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রটির সাপ্তাহিক সওদার ধার্যদিন প্রতি শনি ও মঙ্গলবারে ইজারা বঞ্চিত উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম গ্রুপ বিভিন্ন ইস্যূ নিয়ে বাজারে চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়ে লাঠি সহ দেশীয় অস্ত্র সহ মিছিল অব্যাহত রাখেন আবার ইজারাদার উপজেলা যুবলীগ সম্পাদক জাহাঙ্গীরের সমর্থকরা বাজার থেকে তাদের তাড়াতে গেলে প্রায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটায় দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা বাজারে আসা বন্ধ করে দিলে বাজারের ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছে বিশেষ করে কাচামাল ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল বিক্রি করতে না পেরে প্রবাহিত খালে ফেলে দিয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে ৬ মে দিবাগত রাত ১১টার দিকে বাজারের পশ্চিম মাথার ব্যবসায়ী গিয়াসুদ্দিনের ওপর ফাঁসিয়াখালী জালিয়াকাটার আছু মিয়ার ছেলে ইসমাঈল, কবির ও নওশামিয়ার ছেলে বাহাদুর হামলা চালিয়ে তার দোকান ভাংচু করে। ইতিপূর্বেও বাজারে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্যে বিনা কারণে মিছিল ও মহড়া দেয়ার কারণে ব্যবসার ক্ষতিতে ব্যবসায়ীরা আক্ষেপ করার কারণে সন্ত্রাসীরা মারধর করেছে।

এছাড়াও সাপ্তাহিক সওদার দিনে সকাল থেকে ফাঁসিয়াখালীর বারেক, ডাকাত গুরা বাদশা, ডাকাত বেলাল বারবাকিয়া পাহাড়িয়া খালীর ডাকাত সম্রাট জাহাঙ্গীর, টইটং এর দা-বাহিনীর চিহ্নিত ডাকাত পেকুয়া বাজারে নিয়মিত জড়ো হলে সর্বস্ত্ররে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা বলেন, সম্প্রতি চিহ্নিত ডাকাতদের পেকুয়া বাজারে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়ায় যে কোন সময় লুটপাটের ভয়ে তাদের আতংকে থাকতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেকুয়া বাজারের ফাসিঁয়াখালী ব্রীজ ও পশ্চিম মাথার অনেক ব্যবসায়ীরা বলেন, তারা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারছেনা। অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে পুরো বাজারে ব্যবসা বাণিজ্যে ধ্বস নেমেছে। সর্ব শেষ পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ী সংগঠন বাজার এলাকায় অব্যাহত সন্ত্রাস বন্ধ ও নির্বিঘ্নে ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টির, বাজার এলাকায় বহিরাগত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বন্ধ, সর্বপ্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচী মুক্ত বাজার, ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা বন্ধের ও হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবীতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানায়।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট মীর শওকত হোসেন এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন কিছ দিন ধরে বাজারে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ব্যবসায়ীদের উপর হামলা জনমনে আতংক বিরাজ করায় এবং প্রতিদিন বাজারে মানুষের যানমালের ক্ষতি হওয়ার কারণে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।  

Exit mobile version