parbattanews

 পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অভিভাবক শুন্য

পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা সদরে অবস্থিত পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গতবছর ধরে অভিভাবক শুন্য হয়ে পড়েছে। পাবলিক পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফলাফল, সংস্কৃতি, পাঠদান ও বিদ্যালয়ের সার্বিক অবকাঠামোর দৃষ্টি-নান্দনিকতা মডেলে রূপান্তরিত করেছিলেন প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ চৌধুরী।

বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধান শিক্ষক হানিফ চৌধুরীর নিরলস ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় তার শৈল্পিক হাতে গড়ে উঠা বিদ্যালয়ের ২৯জন ছাত্র সদ্য ঘোষিত পিএসসির ফলাফলে জিপিএ ৫সহ শতভাগ পাশ করেছে। এর মধ্যে ২০ জনের অধিক ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও প্রাথমিক পর্যায়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরব উপস্থিতি যেন প্রতিটি শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে সবার নজর কাড়া। প্রতি বছর মার্চপাশ ডিসপ্লেতে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় যেখানে অপরিষ্কার, অপরিচ্ছন্নতার জন্য দূর্গন্ধ বের হত, সেখানে প্রধান শিক্ষক হানিফ চৌধুরীর প্রচেষ্টায় এখন ফুলের পবিত্র সুবাসে ভরপুর হয়ে উঠেছে। বিদ্যালয়ের বেহাত হয়ে যাওয়া জায়গায় এখন গড়ে উঠেছে বিদ্যালয়ের নামে কমপ্লেক্স। মনোমুগ্ধকর বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, বিদ্যালয়ের আশে-পাশের মনোরম পরিবেশ দেখে সহজে যে কেউ বিমোহিত হয়। এসব কিছু সৃষ্টির কারিগর হচ্ছেন প্রধান শিক্ষক হানিফ চৌধুরী।

জানা যায়, পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মহোদয়ও প্রশংসা করেছেন।

উল্লেখ্য যে, পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সন্তান। তবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই পিছিয়ে পড়া পরিবারের। সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়নে উক্ত বিদ্যালয় ও প্রধান শিক্ষক হানিফ চৌধুরী খুবই আন্তরিক। যিনি বিদ্যালয়কে এতোদূরে নিয়ে গেছেন সেই প্রচার বিমূখ মহৎ মানুষটি আজ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক মামলার শিকার হয়ে মহা-বিপদে। একজন মহৎ শিক্ষককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানারী ঘটনাটি সভ্য সমাজে বেমানান বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  ১৯৮০ সাল থেকে সরকারি খাস জমিতে গড়ে উঠা উজানটিয়া জনকল্যাণ সমিতি’র প্রজেক্টে গত বছর দখল দেখিয়ে উপকূলীয় বন বিভাগ ও স্থানীয় কিছু কুচক্রি মহলের যোগসাজশে একটি ভিত্তিহীন কাল্পনিক মামলা করেন। আর বন বিভাগ কর্তৃক দায়েরকৃত তথাকথিত ভিত্তিহীন একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। আর ওই মামলায় প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ চৌধুরীকে হয়রানীর উদ্দেশ্যে আসামি করা হয়। সেই মামলায় শিক্ষক হানিফ চৌধুরী আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যথারীতি জামিন গ্রহণ করেন। এদিকে হানিফ চৌধুরীর পারিবারিক প্রতিপক্ষ দেলোয়ার করিম জামিননামাসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সাসপেন্ডের  জন্য আবেদন করলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

উল্লেখ্য যে, ওই শিক্ষক মামলার নথিতে বন বিভাগের উল্লেখিত তারিখে পিএসসি পরীক্ষার হল সুপার হিসাবে শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র প্রস্তুতির কাজে রত ছিলেন। ঐ দিন ছিল চন্দ্র মাসের ১৭ তারিখ ভরাকাঠালে চরডোবা থাকে। কিভাবে ঐ দিন মাটি কাটল বোধগম্য নয়। সমিতির দখলে থাকা ভূমির জন্য ব্যক্তির নামে মামলা কেন প্রশ্ন তুলেন এলাকাবাসী। মামলা করলে সমিতির বিরুদ্ধে দায়ের করার উচিত ছিল। বন বিভাগ এখানে নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়ে নিরাপরাধ লোকজনদের হয়রানীর জন্য মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। ওই মামলায় বৃক্ষ কর্তনের কোন কথার উল্লেখ নাই। ৩০ বছর পূর্বে যা ছিল তা এখনো আছে। তাই বন বিভাগের দায়েরকৃত মামলাটি কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধারাবহিক ক্রমোন্নতির জন্যওই শিক্ষককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষককে এখন কুচক্রি মহল কর্তৃক মামলার হুমকি দেওয়া হয়। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষকদের মনোবল ক্ষীণ হয়ে আসবে। একটি ছোট বিদ্যালয় বাঁচানোর জন্য হানিফ স্যারের মতো নিরলস পরিশ্রমী ও সরকারি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আন্তরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা থেকে অব্যাহতি আশু প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষাথী, অভিভাবক ও সর্বোপরী এলাকাবাসী।

Exit mobile version