পেশাদারিত্বের সাথে নিরপেক্ষভাবে সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত হচ্ছে : র‌্যাব মহাপরিচালক

fec-image

পেশাদারিত্বের সাথে নিরপেক্ষভাবে সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর লামারবাজার সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ সড়কের চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন র‌্যাবের এই মহাপরিচালক।
সোমবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই এলাকার কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান।

তিনি বলেন, “সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা পেশাদারিত্বের সাথে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। সব তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রেরণ করা হবে সেখান থেকে চূড়ান্ত ফলাফল আসবে।”

সিনহার কাছে অস্ত্র ছিল কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, “সবকিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই হচ্ছে। এই মুহূর্তে তদন্তের স্বার্থে আমরা সিনহার অস্ত্রের কথা বা কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি না।”তদন্তের পরে সবকিছু পরিস্কার হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে গত রবিবার এই মামলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির গণশুনানি শেষ করেন কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও তদন্ত কমিটির সদস্য- কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহজাহান আলী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন এবং রামু ক্যান্টনমেন্টের লেফটেনেন্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, “গত ৩ আগস্ট আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করি। ৭ কর্মদিবসের মেয়াদে আগামী ২৩ আগস্ট আমাদের তদন্তের শেষ সময়। এই ঘটনার উৎস, কারণ এবং এটি প্রতিরোধে ভবিষ্যতে কী ধরণের সুপারিশ করা হবে সে বিষয়ে আমরা তদন্ত কাজ শুরু করি। ঘটনা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি জায়গায় আমরা গিয়েছি, খোঁজ-খবর নিয়ে জায়গাগুলোর মানচিত্র তৈরি করেছি এবং ঘটনায় সংশ্লিষ্ট  প্রশাসন, চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ প্রায় ৬০ জন থেকে সাক্ষ নেয়া হয়েছে।
এই ঘটনার সুষ্ঠু  তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলের পাশে সরকারি স্থাপনা (শামলাপুর ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়) বেছে নেয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত কার্যের শেষ ভাগে পৌঁছেছি। ২৩ আগস্ট এর মধ্যে  সরকারের কাছে আমরা তদন্ত রিপোর্ট  জমা দিবো। এরপর সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর লামারবাজার এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান।
এ ঘটনায় গত ২ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে ঘটনা সরেজমিনে তদন্ত করে কারণ ও উৎস অনুসন্ধান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মতামত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে তদন্ত দল রোববার এ গণশুনানির আয়োজন করে।

অপরদিকে এ ঘটনায় নিহত মেজর সিনহার বোন শারমিন ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন। মামলায় পুলিশের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের আইসি পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয় পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। এ মামলায় বর্তমানে সাত আসামি জেল হাজতে রয়েছেন। এরা হলেন- এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এএসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন