শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি:
গত কয়েকদিনের তাপদাহে জেলার পানছড়ির জন জীবন হয়ে পড়েছে বিপন্ন। একদিকে বিদ্যুতের লোডশোডিংয়ের লুকোচুরি তার সাথে যোগ হয়েছে গরমের প্রচন্ড তাপ। মরুর বুকের প্রচন্ড তাপের মতো গরমে দিশাহারা হয়ে পড়েছে পানছড়ি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। গরমের তাপ থেকে রেহাই পেতে খোলা আকাশের নীচে ও গাছ তলায় হালকা ঠান্ডা হাওয়ার পরশ নিতে এসেও কেউ রেহাই পাচ্ছে না।
গৃহপালিত পশুদেরও বিভিন্ন জায়গায় হাটু পানিতে গা ভিজিয়ে নিতে দেখা গেছে। তাই মানবকুলের পাশাপাশি পশুপাখিদের জনজীবনেও নেমে এসেছে অস্থিরতা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে শিক্ষকরাও আছে বিপাকে। অসুস্থ হয়ে পড়লে দায়বদ্ধতা শিক্ষকদেরেই নিতে হবে। অসহনীয় গরম আর প্রচন্ড তাপমাত্রার কারণে দিনের বেলায় প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের হচ্ছে না কেউ তাই দিন দুপুরে রাস্তা-ঘাট প্রায়ই থাকে জনশুন্য। তাছাড়া বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ের কারণে আরো বড় বিপাকে আছে বিভিন্ন বাহিনী থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সর্বসাধারণ।
পানির অভাবে মরুর মত হাহাকারে পরিনত হয়েছে পানছড়ির সর্বত্র। চৈত্র ও বৈশাখের এই প্রচন্ড খরায় উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় লেগেছে পানির হাহাকার। যা বিগত দিনের ইতিহাসকে হার মানিয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকেই বলছেন। ১নং লোগাং ইউপির ফাতেমা নগরবাসীরা চেংগী নদী পাড়ি দিয়ে ঝর্ণা থেকে ঝরে পড়া এক ফোটা দু’ফোটা পানি নিতে কলসী নিয়ে ভীড় জমাচ্ছে ৩নং পানছড়ি এলাকায় চেংগী নদীর পাড়ে। যা নিজ চোখে না দেখলে সম্পুর্ন অবিশ্বাস্য ও কাল্পনিক। অথচ এই পানি পান করা কতটুকু নিরাপদ তারা সে বিষয়ে কিছুই জানেন না।
একদিকে পানির হাহাকার অন্যদিকে প্রচন্ড তাপদাহ অপর দিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং এই ত্রিমুখী সমস্যায় সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। প্রতিনিয়তই হাসপাতাল মুখী হচ্ছে নবজাতক থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধরাও। ডায়েরিয়া, বমি, মাথা ব্যাথা, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টের মতো রোগীর সংখ্যা পানছড়িতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানা যায়।
পানছড়ি থানা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা মো: নাসির উদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়েরিয়া রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমানেও চার জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান, এই প্রচন্ড গরমে হিট ষ্ট্রোক ও নিউমোনিয়া রোগের প্রবনতা বেশী দেখা দেয়। অভিজ্ঞ মহলের ধারনা ঝুমে আগুন ও অবাধে বনজ সম্পদ উজাড় করার কারণেই আজ আবহাওয়ার এই প্রতিকুলতা। সবাইকে সচেতন হয়ে এসব রোধ করতে পারলেই হয়তো আগামী প্রজন্মরা অনুকুল আবহাওয়ায় বাস করতে পারবে।