parbattanews

প্রতিটি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠিয়েই ছাড়বে মিয়ানমার

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

প্রতিটি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠিয়েই ছাড়বে মিয়ানমার। বাংলাদেশের যাবতীয় কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক চাপকে উপেক্ষা করে মিয়ানমার প্রতিদিনই নতুন নতুন কৌশল এবং ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে।রাখাইন অঞ্চলে এখনো থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা  বাংলাদেশের টেকনাফে পালিয়া আসা আত্মীয়দের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে আলাপ করে এমন তথ্যই জানাচ্ছেন। এদের মধ্যে এমন অনেক রোহিঙ্গাও আছেন, যারা এক সময় জনপ্রতিনিধি হিসেবেও নেতৃত্ব দিয়েছেন।

টেকনাফে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে সেখানকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানাচ্ছেন তারা। এদের অনেকের পরিবার এখন মিয়ারমারের রাখাইন রাজ্যে শহরাঞ্চলে বাস করে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমারে থেকে যাওয়া তাদের আত্মীয়স্বজনের বরাত দিয়ে জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী চায় সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে যাক। এখন হয়ত গ্রাম পোড়ানো বা হত্যা বন্ধ রয়েছে বা ক্ষেত্রবিশেষে কমেছে, কিন্তু বিভিন্ন প্রকার চাপ ও অসহযোগিতা ও পরোক্ষ নিপীড়ন অব্যাহত আছে। এসব চাপ রোহিঙ্গাদের বাধ্য করেছে নিজ দেশ ছাড়তে।

প্রত্যাবাসন কবে হবে কীভাবে নেওয়া হবে, সে মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া তো দূরের কথা, যে অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গা এখনো দমন-পীড়ন সয়েও মাটি কামড়ে রাখাইন রাজ্যে রয়ে গেছে, তাদেরকে যে করেই হোক বাংলাদেশে পাঠাতে বদ্ধপরিকর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও অং সান সুচির দলীয় সরকার। গত শুক্রবার রাখাইনের একটি গ্রামের হাসান নামে একজন মসজিদের ইমামকে ধরে নিয়ে অত্যাচার করে তার ভুরু তুলে ফেলা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা জমির ধান কাটতে স্থানীয় মগদের চাপ দিয়েছে সেনারা। কিন্তু অনেক মগ তাদের পরশীর জমিতে ধান কাটতে রাজী না হওয়ায় তাদের ওপরও নির্যাতন চালাচ্ছে সেনারা। শেষে অন্য এলাকা থেকে শ্রমিক ধরে এনে রোহিঙ্গাদের ধান কেটে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়েছে তারা। কিন্তু বেশ কিছু জমির ধান পাকলেও তা লোকের অভাবে কাটা যাচ্ছে না। একারণে জমির ধান জমিতেই ঝরে পড়ছে।

রোহিঙ্গা যারা এখনও বাংলাদেশে ‍আসেনি এবং বাংলাদেশে যারা এসেছে সকলকে এক কাতারে চিন্তা করে মিয়ানমার সরকার যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করতে চায়। বাঙ্গালি নামে কার্ড নেওয়ার জন্য তাদের চাপ দিচ্ছে মিয়ানমার সরকার। এই কার্ডকে এনভিসি বা ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড বলা হয়। এই কার্ড যাদের রয়েছে তারা মাত্র ৩০ হাজার মিয়ানমার কারেন্সি বহন করতে পারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য মাত্র আড়াইশো টাকা।

এর বেশি অর্থ কোনো রোহিঙ্গার কাছে পাওয়া গেলেই সেনা, পুলিশকর্মীরা তা কেড়ে নিচ্ছে। যারা কার্ড নেয়নি তাদেরও টাকা পয়সা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।এমন পরিস্থিতিতে কেউ পালিয়ে আসতে চাইলে তাদের আর বাধা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু একবার নিজ গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে গেলে আর ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না।

রাখাইনে স্থানীয় মিডিয়া প্রচার চালাচ্ছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দেশ দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করার বিষয়ে একমত হয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য কোনও দেশের নাক গলানো মিয়ানমার সহ্য করবে না বলেও প্রচার চালানো হচ্ছে।

 

সূত্র: বাংলানিউজ

Exit mobile version