প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে সুপেয় মিষ্টি পানির সংকট!

fec-image

দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে সুপেয় মিষ্টি পানির সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বীপের উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব -পশ্চিম অর্থাৎ সমুদ্র ঘেষা দ্বীপের চারপাশে এ সংকট দেখা দেয়।
এ সুপেয় মিষ্টি পানির অভাব দেখা দেওয়ায় দ্বীপের সাধারণ বাসিন্দারা পড়েছে বিপাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরে ঘূর্ণিঝড় চিত্রাং সেন্টমার্টিন দ্বীপে আঘাত হানে এবং সাগরে অতিরিক্ত জোয়ারের ফলে লবনাক্ত পানি উপকুলে উঠেছিল। এতে দ্বীপের চারপাশের নিম্নাঞ্চল ডুবে যায়। টিউবওয়েল ও পুকুরগুলোতে লবনাক্ত পানি ডুকে। তখন থেকে ধীরে ধীরে মিষ্টি পানি লবনাক্ততা আকার ধারন করে। ফলে দ্বীপের চারপাশের মানুষগুলো মাঝের পাড়ার টিউবওয়েল ওয়ালাদের উপর নির্ভর হয়ে পড়ে। এলাকার মহিলাদের দ্বীপের মধ্যম পাড়াগুলো হতে কলসী নিয়ে পানি আনতে হয়।

এ সময় দ্বীপের দক্ষিণ পাড়ার মরিয়ম বিবি বলেন, বাসায় একটা টিউবওয়েল ছিল। সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে টিউবওয়েলের পানি লবন হয়ে যায়। এখন প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে হয়। এতে অনেক ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে।

ডেইল পাড়ার কুলসুম আক্তার জানান, আমরা দুই ঘর মিলে পানি ব্যবহারের জন্য একটি মাত্র টিউবওয়েল ছিল। সাগরের লবন পানি ডুকে টিউবওয়েলের পানি লবনাক্ত হয়ে গেছে। এখন অনেক দূরে গিয়ে খুব কষ্ট করে পানি সংগ্রহ করতে হয়। একই কথা পশ্চিম পাড়ার হাজেরা বেগম, লায়লা বেগমসহ অনেকের।

তারা আরও বলেন, সামনে গ্রীষ্মকাল । এখন শীতকালে পানির এ সমস্যা দেখা দিলে গ্রীষ্মের গরমে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে। তাই এখন থেকে যথাবিহীত ব্যবস্থা গ্রহন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান ভুক্তভোগী দ্বীপবাসী।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের সংবাদকর্মী নূর মোহাম্মদ জানান, ঘুর্নিঝড় সিত্রাং এর পর থেকে দ্বীপে মিষ্টি পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দ্বীপের চারপাশে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান সুপেয় মিষ্টি পানির সমস্যার তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পরিষদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি ছোট প্রবাল দ্বীপ (মাত্র ৮ বর্গকিলোমিটার)। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে ও মায়ানমার-এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে স্থানীয়ভাবে একে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সমুদ্রপ্রেমীদের কাছে এটি ব্যাপক পরিচিত একটি নাম। বর্তমানে সেখানে বসবাস করে প্রায় বারো হাজার মানুষ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন