parbattanews

প্রশ্নবিদ্ধভাবে বান্দরবানে শুরু হল ইউএসএআইডি’র খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বান্দরবানের দুর্গম জনপদসমূহে খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পুষ্টিমান উন্নয়ন নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি ‘সাসটেইনেবল অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড প্রোডাকশন লিংকড টু ইমপ্রুভড নিউট্রেশন স্ট্যাটাস, রেসিল্যান্স অ্যান্ড জেন্ডার ইক্যুালিটি (সেপলিং)’ প্রল্পের কাজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা হয়েছে।

জানা যায়, হেলেন কেলারের তত্বাবধানে ক্যাথলিক রিলিফ সার্ভিস (সিআরএস), কারিতাস বাংলাদেশ এবং পাঁচটি স্থানীয় এনজিও মাঠপর্যায়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা (ইউএসএআইডি) প্রকল্পে অর্থ দাতার  সহায়তায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা হেলেন কেলার’র তত্ত্বাবধানে জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রকল্পের বৃহস্পতিবার উদ্বোধন  ঘোষনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি।

বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, বাংলাদেশে ইউএসএআইডি’র মিশন প্রধান মিজ জেনিনা জুরুজেলস্কি, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হারুনুর রশিদ, সেপলিং প্রকল্পের প্রধান মিজ টিনা বিশপ এতে বক্তব্য দেন। সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, কৃষি ও পুষ্টি সংলিষ্ট কর্মকর্তা, এনজিও এবং সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে পাঁচ বছরে প্রকল্পে মোট কত টাকা ব্যয় করা হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি ইউএসএআইডি এবং হেলেন কেলার কর্তৃপক্ষ। এছাড়া জেলার সাত উপজেলার মধ্য কেন পাঁচ উপজেলাতে প্রকল্পের কাজ করা হবে সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

অনুষ্ঠানে সেপলিং প্রকল্পের প্রধান মিজ টিনা বিশপ জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি লিঙ্গ সমতা, নারী ও পুরুষ এবং যুব সমাজের কর্মসংস্থান সম্ভব হবে। এছাড়া পরিবেশবান্ধব বেশ কিছু পদক্ষেপও বাস্তবায়িত হবে এবং বিরাজমান খাদ্য সংকট নিরসনে কাজ করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ঝুঁকিতে থাকা পার্বত্যাঞ্চলের জনগণের পুষ্টি ব্যবস্থার উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তার পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে সেপলিং প্রকল্প। অনুষ্ঠানে হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর মেরিডিথ জ্যাকশন স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বক্তব্যকালে বলেন, ইউএনডিপিসহ কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থার কাজ অসমাপ্ত রেখে প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘হেলেন কেলার যেন ‘কিলার’ না হয়ে ওঠে ’।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, ইতিমধ্যে ইউএনপি’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা পাহাড়ী মানুষের উন্নয়ন করতে গিয়ে কোটি কোটি টাকা ধ্বংস করেছেন। প্রকল্পে এনজিও নির্বাচন এবং কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বান্দরবানে প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে বহিরাগতদের নিয়োগ করা হলে তা মেনে নেওয়া হবে না।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদের বিপরীতে ৩৮ জনের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। তার মধ্য বান্দরবান জেলা থেকে পাহাড়ী-বাঙ্গালী মিলিয়ে মাত্র ১১ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

Exit mobile version