প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য অটুট রেখে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

fec-image

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য অটুট রেখে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার। উন্নয়ন পরিকল্পনা নিশ্চিত করতে মাস্টার প্ল্যান তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৮ মে) সকালে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের নবনির্মিত বহুতল ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দেশের বিশাল সমুদ্রের প্রকৃতিক সম্পদ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সম্পদ অপচয়রোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সরকার প্রধান।

সেই সাথে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে অপরিকল্পিত অবকাঠামো না করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ভবন নির্মাণের তাগিদ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠে আয়োজিত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যয়ালি যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্র সীমায় অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এখন সমুদ্র সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য সুনীল অর্থনীতি নিয়ে কাজ চলছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্র সীমা ও পাহাড় মিলিয়ে একটি ভূখণ্ড আমরা পেয়েছি। এর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করা প্রয়োজন। এই সম্পদ রক্ষা করতে হবে। পর্যটকদের জন্য ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু প্রাকৃতিক পরিবেশ যেন নষ্ট না হয়।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কক্সবাজারকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা হবে। সেজন্য আমি সবাইকে, বিশেষ করে কক্সবাজারবাসীকে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ না করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশাল সমুদ্রসীমায় পর্যটনের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করার মাধ্যমে এ জায়গাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ আমরা নিতে যাচ্ছি। তাছাড়া যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক এয়ার রুটে পড়ে, তাই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠায় সরকারের কাজ চলমান রয়েছে।’

বিমানবন্দর যখন সম্পূর্ণ হবে, তখন পশ্চিমা দেশগুলো থেকে প্রাচ্যে যাতায়াতকারী বিমানগুলো এখান থেকে রিফুয়েলিং করার মাধ্যমে এটি একটি রিফুয়েলিং কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, রিফুয়েলিংয়ে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে অগ্রাধিকার পায়। এক সময় হংকং ছিল, এরপর থাইল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুর এখন দুবাই। কিন্তু, এখন কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশপথে রিফুয়েলিংয়ের একটি কেন্দ্র। পাশাপাশি এখানে তার সরকার ক্রিকেট স্টেডিয়াম করেছে, ফুটবল স্টেডিয়ামও করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খেলাধুলা আয়োজনের সব ধরনের ব্যবস্থা এখানে থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি আরও জানান, মেরিন ড্রাইভ যেটি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত করা হয়েছে সেটা একেবারে চট্টগ্রাম পর্যন্ত করা হবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, কক্সবাজার -৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, একই মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, জেলা প্রশাসক মো. মানুনুর রশীদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড.ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান প্রমুখ।

শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন, কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ।

তিনি বলেন, নানা সংকট-সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে ৬ বছরের মধ্যে কউক নিজস্ব ভবনের কাজ শেষ করতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় কউকের ভবনসহ বড় উন্নয়ন কাজগুলো সম্ভব হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার কউক ভবন নির্মাণের জন্যে ১ দশমিক ২১ একর জমি বরাদ্দ দেয়। এরপর ২০১৭ সালে এই জমিতে ১০ তলা স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১শ ১৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

কউক চেয়ারম্যান বলেন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এনডিই লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বেচে গেছে, যা সরকারি কোষাগারে ফেরৎ পাঠানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের কর্মকাণ্ড এবং নবনির্মিত ভবনের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উন্নয়ন, কক্সবাজার, জীববৈচিত্র্য
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন