parbattanews

প্রোটিয়াদের বিধ্বস্ত করে ভারতের নতুন রেকর্ড

south-africa4খেলা ডেস্ক:

দক্ষিণ আফ্রিকাকে একেবারে বিধ্বস্ত করেই নতুন রেকোর্ড গড়লো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারত। বিশ্বকাপে আগের তিনবারের দেখায় প্রোটিয়ারাই শেষ হাসি হাসলেও রোববার (২২ ফেব্রুয়ারি) শেষ হাসিটা আলো ছড়ালো মহেন্দ্র সিং ধোনি বাহিনীর মুখেই। চতুর্থবারের দেখায় এবারের আসরের হট ফেভারিট প্রোটিয়াদের ১৩০ রানে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিল ভারত।

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে সাত উইকেটে ৩০৭ রান জমা করে ভারত। ৩০৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪০.২ ওভারে মাত্র ১৭৭ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

রানের চাপে কূল হারিয়ে ফেলা দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত ১৩০ রানে হেরেছে ভারতের কাছে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম প্রোটিয়াদের হারালো ভারত। যা ধোনিবাহিনীকে এনে দিল টানা দ্বিতীয় জয়।

৩০৮ রানের টার্গেটটা অনাতিক্রম্য ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। তবে এমন রান তাড়া করতে গেলে ইনিংসের গোড়া থেকে যেই শুরুটা প্রয়োজন তা পায়নি প্রোটিয়ারা। ১২ রানে শামির বলে কোহলিকে ক্যাচ দিয়েছেন কুইন্টন ডি কক। নির্ভরতার প্রতীক আমলাও (২২) ফিরে গেছেন দলীয় ৪০ রানে মোহিত শর্মার শিকার হয়ে। ডু প্লেসিস ও অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্সের জুটি কিছুটা আশার সঞ্চার করেছিল। ৬৮ রানেই এই জুটি বিচ্ছিন্ন হয় ডি ভিলিয়ার্স রান আউট হলে। তিনি ৩০ রান করেন।

বড় টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারায় প্রোটিয়ারা। কুইন্টন ডি কককে (৭) কোহলির হাতে ক্যাচ বানান মোহাম্মদ সামি। ২২ রান করা হাশিম আমলাকে ফিরিয়েছেন মুহিত শর্মা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ফাফ ডু প্লেসিস ও ভিলিয়ার্স বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা করেছেন। এই জুটি থেকে আসে ৬৮ রান। তবে দলীয় ১০৮ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হয়েছেন ক্রমেই ঝলসে উঠা এবি ডি ভিলিয়ার্স। ৩৮ বলে ৩০ রান করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। এরপর ফাফ ডু প্লেসিসকে আউট করেন মুহিত শর্মা। তবে সাজঘরে ফেরার আগে ৭১ বলে ৫৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে যান প্লেসিস। এরপর অশ্বিনের ঘুর্ণি চমক। ডুমিনিকে (৬) রায়নার হাতে তালুবন্দী করান তিনি।  দলীয় রান তখন ১৪৭। এরপর ছয় রান যোগ করতেই দুই উইকেটের পতন। ২২ রান করা মিলার হন রান আউট।  শুন্য রানে অশ্বিনের এলবিডব্লিউর শিকার ফিলেন্ডার। ১৫৩ রানেই নেই সাত উইকেট।

এমন দুঃসময়ে কেউ হাল ধরতে পারেনি। উল্টো ১৬১ রানের মধ্যে খোয়াতে হয় আরও দুটি উইকেট। বিদায় নেন পেসার ডেল স্টেইন (১) সামির বলে ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তবে মর্কেলকে (২) ঘুর্নি বলে বোল্ডই করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। প্রোটিয়াদের তখন সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৬১ রান।  শেষ উইকেটে একটু লড়াই করেছেন স্পিনার ইমরান তাহির ও ওয়েন পারনেল। তবে সেটা পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনার লড়াই। ১৭৭ রানের মাথায় ইমরান তাহিরকে (৮) এলবিডব্লিউর ফাদে ফেলেন জাদেজা। অল আউট দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে পারনেল অপরাজিত থাকেন ১৭ রানে। ভারতের হয়ে অশ্বিন তিনটি, মুহিত শর্মা ও মোহাম্মদ সামি দুটি, জাদেজা নেন একটি উইকেট। দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা শিখর ধাওয়ান পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

এর আগে মেলবোর্নে হাইভোল্টেজ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। ১৩৭ রান করেন ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ান। বিশ্বকাপে ধাওয়ানের এটি প্রথম সেঞ্চুরি, ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সপ্তম এবং ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস। ৭৯ রান এসেছে আজিঙ্কা রাহানের ব্যাট থেকে।

রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুতেই রোহিত শর্মার উইকেট হারায় ভারত। এবি ডি ভিলিয়ার্সের সরাসরি থ্রোতে রান আউটের শিকার হন মুম্বাইয়ের ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ভারতকে ১২৭ রানের স্বস্তি উপহার দেয় বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ান। শেষ পর্যন্ত কোহলি ৪৬ রান করে ইমরান তাহিরের শিকারে পরিণত হলে সেই জুটি ভাঙে। ২৮ ওভারের প্রথম বলের ঘটনা সেটা। তৃতীয় উইকেটে আজিঙ্কা রাহানেকে নিয়ে আবার প্রতিরোধ গড়েন সেই ধাওয়ান।

৪৪ ওভারের চতুর্থ বলে গিয়ে আউট হন ধাওয়ান। ১৪৬ বলে ১৩৭ রান আসে তার ব্যাটে। ১৬টি চারের সাথে দুটি ছক্কাও হাঁকান ভারতীয় ওপেনার। ৩ ছক্কা ও ৭ চারে ৬০ বলে ৭৯ রান করে আউট হন রাহানে। ডেল স্টেইনের গোলার মতো এক বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন তিনি। এরপর দ্রুত আউট হয়ে যান সুরেশ রায়না ও রবীন্দ্র জাদেজারা। প্রথম জন ৬ আর দ্বিতীয় জন ২ রান করেন। মরনে মরকেল দুটি উইকেট শিকার করেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন ডেল স্টেইন, ইমরান তাহির এবং ওয়েন পারনেল।

Exit mobile version