ফুলের ব্যবহারে হয়ে উঠুন ফুলের মতো সুন্দর!

tunarblog_skin-care-with-roseলাইফস্টাইল ডেস্ক:

আপনি ফুল ভালোবাসেন তো? অবশ্য ফুলের মতো সুন্দর জিনিসকে কি আর ভালো না বেসে পারা যায়! ফুলের মতো সৌন্দর্য পেতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন ফুল-ই! কীভাবে? জেনে নিন ত্বকের যত্নে অতি পরিচিত কিছু ফুলের ব্যবহার ও তাদের গুণের কথা।

গাঁদা

গাঁদাফুল খুবই কার্যকর একটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। ব্রণের সমস্যা দূর করতে এ ফুল খুবই ভালো কাজ করে। গাঁদাফুল ও পাতা থেঁতো করে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন। ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

রোদে পোড়া দাগ দূর করতেও গাঁদাফুলের জুড়ি নেই। কয়েকটা গাঁদাফুলের পাঁপড়ি বেটে নিয়ে এতে ২ চা চামচ কমলার রস মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখসহ রোদে পোড়া অংশগুলোতে লাগান। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এতে রোদে পোড়া দাগ দূর হবার পাশাপাশি ত্বকের রঙের অসামঞ্জস্যতাও দূর হবে।

ত্বকের কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে গাঁদাফুলের পাঁপড়ি বাটা, চন্দন পাউডার ও গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে দাগ দূর হবে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।

গোলাপ

ত্বকের পরিচর্যায় গোলাপফুলের ব্যবহার নানাবিধ। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে গোলাপের কয়েকটি পাঁপড়ি কাঁচা দুধে ভিজিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর এই পাঁপড়িগুলো বেটে নিন এবং এর সাথে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি পুরো মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে ত্বককে করে তুলবে কোমল ও মসৃণ।

গোলাপফুল বলিরেখা দূর করতেও সাহায্য করে। কয়েকটি গোলাপের পাঁপড়ি ভালো করে বেটে নিন। এর সাথে ত্বক তৈলাক্ত হলে লেবুর রস, শুষ্ক হলে কমলার রস এবং মিশ্র হলে শসার রস মিশিয়ে নিন। এরপর এ মিশ্রণটি তুলার বলের ওপর নিয়ে প্রতিদিন ত্বকে লাগান। বলিরেখা তো দূর হবেই, ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি পাবে।

জবা

লাল জবাফুল থেঁতো করে নিন। এর সাথে চালের গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। তারপর আলতো হাতে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে এ মিশ্রণটি।

পদ্ম

ক্লেনজার, টোনার ও ময়েশ্চারাইজার – এই ত্রিমুখী ভূমিকা পালন করতে পারে পদ্মফুলের রস। পদ্মফুলের পাঁপড়ি বেটে রস ছেঁকে নিন। ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে এই রসে তুলো ভিজিয়ে ত্বকে লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতেও পদ্মফুলের জুড়ি নেই। পদ্মপাঁপড়ি চটকে নিয়ে চালের গুঁড়ার সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এটা স্ক্রাবার হিসেবে খুবই ভালো।

রজনীগন্ধা

শুষ্ক, রুক্ষ ত্বকে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে পারে রজনীগন্ধা। পূর্ণস্ফুটিত রজনীগন্ধা ফুলের পাঁপড়ি বেটে নিন। এর সাথে সামান্য মাখন ও মধু মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

বেলী

বেলীফুল থেঁতো করে নিন। এর সাথে অ্যালোভেরার রস ও মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক টানটান ও মসৃণ হয়ে উঠবে। নিয়মিত ব্যবহারে বলিরেখা বিলম্বিত হবে।

শাপলা

শাপলাফুল ও তিল বেটে নিন। এর সাথে নিমের তেল মেশান। ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। এরপর বরফঠাণ্ডা পানিতে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ও ব্রণযুক্ত ত্বকের যত্নে এ মিশ্রণের তুলনা নেই।

সতর্কতা

– ব্যবহার করার আগে ফুল ভালো করে ধুয়ে নিন।

– বিভিন্ন মৌসুমে হরেক রকমের ফুল পাওয়া যায় এবং সেগুলো রূপচর্চায় কাজে লাগানো যেতেই পারে। তবে কোনোটিই সরাসরি ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ কোনোটির অম্লতা বেশি হতে পারে আর সেক্ষেত্রে হিতে বিপরীতও হতে পারে। তাই অবশ্যই কোনো কিছুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

– ফুলের তৈরি প্যাক বা মিশ্রণগুলো টাটকা অবস্থায় ব্যবহার করা উচিত। বেশি দিন রেখে দিলে এতে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।

– ফুলের রস ব্যবহার করার আগে হাতের কোনো অংশে তা ব্যবহার করে দেখুন এর থেকে আপনার অ্যালার্জি হয় কি না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *