parbattanews

ফেনী নদীতে দেবী দুর্গার বিসর্জন

খাগড়াছড়ির রামগড়ে বাংলাদেশ- ভারত সীমান্তবর্তী ফেনী নদীতে দু’দেশের অগণিত হিন্দু ধর্মাবলম্বীর অংশগ্রহণে সম্পন্ন হয়েছে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার বিসর্জন। বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে গেল ক’বছর অনেকটা সাদাসিধে আয়োজন হলেও এবার ছিল ব্যাপক আনন্দ উৎসবমুখর।

বুধবার (৫ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টায় ফেনী নদীতে এ বিসর্জন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। এ বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে ফেনী নদী পরিণত হয় দুদেশের মানুষের মিলন মেলায়।

রামগড়স্থ দক্ষিণেশ্বরী কেন্দ্রিয় কালীবাড়িতেই উপজেলার একমাত্র সার্বজনিন দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার বেলা ২টায় কালীবাড়ি থেকে বিজয়া দশমীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। দেবী দুর্গাসহ অন্যান্য প্রতিমা নিয়ে এ শোভাযাত্রা পৌরসভার জগন্নাথপাড়া, ডেবারপাড়, মাস্টারপাড়া, রামগড় বাজার, আনন্দপাড়া প্রভৃতি এলাকা প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালিতে শত শত সনাতন ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা উপজাতীয় ও বাঙ্গালি হিন্দু নারী, পুরুষ, আবালবৃদ্ধবণিতা অংশ নেন।

বিজয়া দশমীর এ বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা শেষে ফেনী নদীর আনন্দপাড়া আবাসিক এলাকা ঘাটে মুর্হুমুহু উলু ধ্বনি, ঢাকডোল, শঙ্খ বাজিয়ে দেবী দুর্গাসহ একে একে প্রত্যেক প্রতিমাকে নামানো হয় নদীতে। প্রতিমাগুলো কাঁধে নিয়ে নদীর পাড় থেকে বিসর্জন দেয়া হয়। এসময় সীমান্তের এপার ও ওপারের সাব্রুম অংশে হাজার হাজার নারী পুরুষ নদীর তীরে সমবেত হন দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে ।

সীমান্তের ওপার খেকেও উলু ধ্বনি ও শঙ্খ বাজিয়ে দেবী দুর্গার বিসর্জনে অংশ নেন ভারতীয়রা। বির্সজনের পর নদীর দুই তীরে দুদেশের হাজারো ভক্ত আনন্দ উল্লাস করে, মেতে উঠে জলকেলীতে। রং মাখামাখি, কাদা ছুড়াছুড়ি করে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা। এক সময় নৌকায় চড়িয়ে দেবী দুর্গার এ বির্সজন সম্পন্ন করা হত ফেনী নদীতে।

আয়োজকরা জানান, এখন নৌকা পাওয়া যায় না। আর শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানিও কমে যায়। তাই বেশ কয়েক বছর ধরে নদীর পাড় থেকেই বিসর্জন দেয়া হয়। এ বিসর্জন অনুষ্ঠান ঘিরে নদীর দুই পাড়েই দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন ছিল।

এদিকে, দুর্গোৎসব শুরুর পর উপজেলার একমাত্র দক্ষিণেশ্বরী কালিবাড়ির মণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানাতে আসেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরি অপু, সাবেক চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরি, জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, সাবেক সদস্য অরুণ চন্দ্রসিংহ, ভুবন মোহন ত্রিপুরা, মংপ্রু চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দোকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাতসহ বিভিন্ন সরকারি পদস্থ র্কমকর্তা, রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃব্ন্দৃ।

শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপনে সহযেগিতার জন্য দক্ষিণেশ্বরী কালিবাড়ি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শুভাশীষ দাশ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

Exit mobile version