parbattanews

ফেনী নদীতে বিএসএফের বেড়ায় আটকে গেল বারুণীর মিলনমেলা

রামগড় সাব্রুম সীমান্তবর্তী ফেনী নদীতে বুধবার (৩০ মার্চ) অনুষ্ঠিত হল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বারুণী স্নানোৎসব। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তক্ষীবাহিনী (বিএসএফ) ফেনী নদীতে বেস্টনী গেড়ে কঠোর অবস্থানের কারণে দুই দেশর মানুষের সম্প্রীতির মিলন মেলা হল না এবারও।

দুদেশের মানুষের নদীপাড়াপাড় রুখতে বিএসএফ মঙ্গলবার রাতেই রামগড়ের আনন্দপাড়া ও সাব্রুমের মেলাঘাট এলাকায় ফেনী নদীর মাঝখানে খুঁটি গেঁড়ে বেস্টনী তৈরি করে। বুধবার ভোরবেলা থেকে বিপুল সংখ্যক বিএস্এফ মোতায়েন করা হয় ঐ এলাকায়। এপারেও নিয়োজিত ছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ফলে পুণ্যার্থীরা সকাল থেকেই দলে দলে নদীতে এলেও বেস্টনী অতিক্রম করতে পারেননি। তবে দুপাড়ে অবস্থান নেয়া পৌরহিতরা পুজা আর্চনা করেন। পুণ্যার্থীরা স্ব স্ব স্থানে পূণ্য স্নান সম্পন্ন করেন।

দুদেশে বসবাসকারি অনেকের আত্মীয় স্বজন একে অন্যের সাথে দেখা সাক্ষাত কথাবার্তা বলার উদ্দেশ্যে দূরদূরান্ত থেকে আসলেও সীমান্তরক্ষীবাহিনীর কঠোরতায় তাদের আশা পুরণ হয়নি। সুদীর্ঘকাল থেকে এ উৎসব উপলক্ষে দুদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের মিলনমেলা হতো এ ফেনী নদীতে। দুদেশের বসবাসকারী আত্মীয় স্বজনরা যেমন একে অন্যের সাথে দেখা সাক্ষাতের জন্য সারা বছর অধির আগ্রহে থাকতো বারুণী মেলার, তেমনি রামগড় ও সাব্রুম বাজারের ব্যবসায়ীরাও বছরের একটা দিনে অধিক বেচাকেনার জন্য অপেক্ষায় থাকতো।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশংকার অজুহাত দেখিয়ে ২০১৮ সাল থেকে ফেনীনদীতে স্নানোৎসব এবং সীমান্ত পারাপারের সুযোগ বন্ধ করে দেয় বিএসএফ। বৃটিশ আমল থেকেই চৈত্রের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশি তিথিতে প্রতিবছর ফেনী নদীতে বারুণী স্নানে মিলিত হন দুই দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ। তারা পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য তর্পন করে এখানে।

নদীর দুই তীরে দুই দেশের পৌরহিতরা সকালেই বসেন পূজা অর্চণার জন্য। পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা ছাড়াও নিজের পুণ্যলাভ ও সকল প্রকার পাপ, পংকিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে ফেনী নদীর বারুণী স্নানে ছুটে আসেন সনাতন ধর্মাবলম্বী আবালবৃদ্ধবণিতা। স্নানোৎসব হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও এখন তা সার্বজনিন উৎসবে পরিণত হয়।

Exit mobile version