parbattanews

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সিংহ রাসেল মারা গেছে, বোন টুম্পাও শঙ্কটাপন্ন

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকা সেই জোড়া সিংহ শাবকের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী রাসেল অবশেষে মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে সিংহ শাবক রাসেল মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম।পরে উধর্বতন প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে ময়নাতদন্ত শেষে এদিন রাতে সিংহ শাবক রাসেলের মরদেহ পার্কের ভেতরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় সাফারি পার্কের পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তবে অপর সিংহ শাবক টুম্পা এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে বলে দাবি করেন তিনি।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (রেঞ্জ কর্মকর্তা) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, পার্কের সিংহ শাবক রাসেলও টুম্পা গ্যাস্ট্রলোজিকেল রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। প্রথমদিকে দেখা গেছে, সিংহ শাবক রাসেল ও টুম্পার শরীরে বাত, ব্যথা অনুভব হচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থান অবশ হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দাঁতে ক্ষয়, ঘন ঘন প্রস্রাব শুরু করে।

তিনি আরও বলেন , এই ধরনের পরিস্থিতিতে সিংহ শাবক গুলোকে পার্কের বেষ্টনিতে রেখে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন সাফারি পার্কের ভেটেরেনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাত ও মো. জুলকার নাইন। মাঝখানে সিংহ শাবকরা কিছুটা সুস্থ হলেও পরে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে।

পরে সিংহ শাবক গুলোর অধিকতর চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়।

ওই চিঠির প্রেক্ষিতে গত ১৪ জানুয়ারি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন। মেডিকেল টিমের প্রধান চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমেল সাইসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়েল মেডিসিন ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ড. বিবেক চন্দ্র সুত্রধর এর নেতৃত্বে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ভজন চন্দ্র দাস, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অব. পরিচালক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি চিকিৎসক ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন।

ইতোমধ্যে মেডিকেল টিমের প্রধানসহ পাঁচ সদস্যের টিম সাফারি পার্কে এসে রাসেল ও টুম্পার চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ৩১ জানুয়ারি বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিংহ শাবক রাসেল।

সিংহ শাবক রাসেল মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, সিংহ শাবক রাসেল ও টুম্পার জীবন বাঁচাতে আমাদের চেষ্টার কমতি ছিল না । অসুস্থ হবার পর আমরা তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সেই জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে গঠিত মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধান এবং পরামর্শে রাসেল টুম্পার চিকিৎসা চলছিল। এরই মধ্যে সিংহ শাবক গুলো অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠছিল।

ডিএফও রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মারা যাওয়া সিংহ শাবক রাসেল এর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। চিকিৎসাধীন থাকা অপর সিংহ শাবক টুম্পাকে বাঁচিয়ে রাখতে আমরা আরো সচেষ্ট হবো।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, সিংহ রাসেল ২০০৭ সালের ১৫ অক্টোবর ও সিংহী টুম্পা ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর সাফারি পার্কে জন্মগ্রহণ করে।

Exit mobile version