বঙ্গোপসাগরের ডুবুচরে ট্রলার আটকা: ১১ ঘন্টা পর সেন্টমার্টিনে ফিরলো শিশু নারীসহ ৪০ যাত্রী

fec-image

টেকনাফ থেকে সার্ভিস ট্রলারযোগে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা পথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে ভাসমান অবস্থায় বঙ্গোপসাগরের ডুবুচরে আটকা পড়ে ১১ ঘন্টা পর সেন্টমার্টিনে ফিরলো নারী শিশুসহ ৪০ জন যাত্রী। তারা সকলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টায় টেকনাফ পৌরসভার জেটিঘাট হতে রওয়ানা দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছার পর এ ঘটনা ঘটে। বুধবার (৪ আগস্ট) ভোর চারটায় মাঝ সাগরে আটকা পড়া সকলকে স্থানীয় জনগণ ও মাঝি-মাল্লারা উদ্ধার করে তাদের সেন্টমার্টিনে নিরাপদে পৌঁছান।

ট্রলারের যাত্রী তানজিমুল হক, মহি উদ্দিন ও সেন্টমার্টিনের বাসিন্দার সাথে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় সার্ভিস ট্রলার যোগে প্রায় ৪০ জন শিশু ও নারী-পুরুষ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। নাফ নদী পেরিয়ে সাগরের মাঝপথে পৌঁছলে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে এক পর্যায়ে সাগরের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাইক্ষংদিয়ার পাশের চড়ে পৌঁছালে ইঞ্চিন বিকল হয়ে পড়ে। ঠিকঠাক করতেই জোয়ারের পানি নেমে ভাটা হয়ে যায়। এতে চরে আটকা পড়ে। ট্রলারের চালক অপর একটি ট্রলারকে উদ্ধারের জন্য খবর দেয়।

ট্রলারে পুরুষের পাশাপাশি ৪০ জন নারী ও শিশু ছিলো। তারা দীর্ঘ ১১ ঘন্টা উদ্বেগ ‍উৎকন্ঠায় ছিলো। খবর পেয়ে দ্বীপের স্থানীয় জনসাধারণ ও মাঝি-মাল্লারা সহযোগিতার জন্য ৩টি ট্রলার যোগে ওইখানে পৌঁছে। দীর্ঘ ১১ ঘন্টা চেষ্টার পর সাগরে ভাসমান সকল যাত্রীদের উদ্ধার করে ভোর চারটায় সেন্টমার্টিনে পৌঁছতে সক্ষম হয়। এতে যাত্রীদের হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ট্রলারে বোঝাইকৃত পন্যাদীসহ ট্রলারটি ডুবো চরে ঢেউয়ের আঘাতে ডুবে যায়। এখনো ট্রলারটি উদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপে কোভিড-১৯ (করোনা) এর টিকা দেওয়ার কেন্দ্র না থাকায় ভ্যাকসিন নিতে অধিকাংশ যাত্রীরা টেকনাফে আসছিল। টিকা নিয়ে ফিরতে এধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, বিকালের দিকে একটি যাত্রীবাহী ট্রলার সেন্টমার্টিন যাওয়ার উদ্দেশ্যে টেকনাফ ছেড়ে আসে। নৌপথের নাইক্ষ্যংদিয়ার কাছাকাছি পৌঁছালে ট্রলারটি একটি চরের মধ্যে আটকা পড়ে। পরে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়।

ওই ট্রলারে ৪০ জনের বেশি যাত্রী ছিলো। দ্রুত তাদের উদ্ধারে অপর একটি ট্রলারে গেলে দ্বিতীয় ট্রলারটিও আটকে যায়। পরে আরও দুইটি ট্রলারের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। এসব যাত্রীদের অনেকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকে নিতে গিয়েছিলেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. পারভেজ চৌধুরী জানান, ট্রলার দুটিকে উদ্ধারের জন্য কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় আরও দুইটি ট্রলার পাঠিয়ে উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে যাত্রীদের নিয়মিত খোঁজ খবর রেখে নিরাপদের কথা নিশ্চিত করেন ইউএনও।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন