parbattanews

বাঁশি বাজিয়ে সংসার চালান মুক্তিযোদ্ধা মধু

দিঘীনালা প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির দিঘীনাল উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন মধু (৭৫)। ভাতা না পেয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তার বাড়ি দিঘীনালা উপজেলার উত্তর মিলনপুর গ্রামে।

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় বিভিন্ন দপ্তরের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার মৃত এলাহী করম আলীর পুত্র। ১৯৭১ সনে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ভিটা কাজীপুর গ্রাম থেকে নৌকার মাঝি হিসেবে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। বর্তমানে দীঘিনালা উপজেলার উত্তর মিলনপুর গ্রামে বসবাস করছেন।

এ ব্যাপারে কথা হয়, মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন মধু’র সাথে। তিনি জানান, বাড়ির পাশে এ বাঁশ বাগানই তার একমাত্র সহায়-সম্বল। এ বাগানের বাঁশ থেকেই তৈরী করে বাঁশি। আর এ বাঁশি বিক্রি এবং বাঁশির সুরে দেশাত্ববোধক গান বাজিয়ে চলে তাঁর সংসার। তবে তিনি জানান, আগে অনেক বাশি বিক্রি হলেও বর্তমানে তেমন বাঁশি বিক্রি হয় না। তাই বর্তমানে সংসারও চলে খুব কষ্টে।

এদিকে শাহাদাৎ হোসেন মধু’কে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে ভাতা প্রদানের জন্য নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মো. রবিউল ইসলাম, মো. ইসহাক আলী, শ্রী বিশ্বনাথ ধর সরকার একটি সুপারিশ করেছেন।  সেখানে তারা উল্লেখ করেন, “১৯৭১ সনে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমাদের সাথে শাহাদাৎ হোসেন মধু নৌকার মাঝি হিসেবে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেন’।

অন্যদিকে নাটোরের গুরুদাশপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সামছুল হক জানান, “বড়াইগ্রাম উপজেলার শাহাদাৎ হোসেন মধু’র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া বিষয়টি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট শুনেছি”। এ সময় তিনি তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সকল প্রকার সরকারি সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানান।

এ ব্যাপারে দিঘীনালা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. এনামুল হক জানান, নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম এবং গুরুদাশপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট শাহাদাৎ হোসেন মধু’র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার বিষয়টি  আমরা নিশ্চিত হয়েছি। বর্তমানে একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও খুব কষ্টে দুঃখে দিঘীনালা উপজেলার উত্তর মিলনপুর গ্রামে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে খুব শীঘ্রই মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুত করে, সরকারি সুবিধা প্রদান করা প্রয়োজন।

Exit mobile version