বাংলাদেশের লজ্জাজনক হার

fec-image

সিডনিতে নিজেদের অভিষেকের দিনটা ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। প্রথমবার এসএসজিতে খেলার অভিজ্ঞতাটা একেবারেই সুখকর হলো না টিম টাইগার্সের। দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে অর্ধেক রানও তুলতে পারেনি বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে। ১০১ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে ১০৪ রানের হার মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে।

নিজের খেলা প্রথম ২ বলে জোড়া ছক্কা হাকিয়ে স্বপ্নের সীমানাটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। তবে এনরিখ নর্টজের তৃতীয় ওভারেই সেই স্বপ্নের সলিল সমাধি হয়ে যায়। সেই ওভারের প্রথম বলেই সৌম্য সরকার ফিরেন ৬ বলে ১৫ রানে, দুই বল পরেই নাজমুল শান্ত হেঁটেছেন একই পথে। মাত্র ১ রানে নর্টজে ২ উইকেট নেয়ায় ২০৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই বাংলাদেশ পথ হারায়।

বরাবরের স্বপ্নদ্রষ্টা সাকিব আল হাসানও স্বপ্ন দেখাতে পারেননি, নর্টজের তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরেছেন মাত্র ৪ বলে ১ রান করে। সমান বলে সমান রান করে রাবাদার শিকার হয়ে আফিফও ফিরেছে সাজঘরে। পাওয়ার প্লেতে স্কোরবোর্ডে ৪৭ রান ভদ্রস্থ দেখালেও ততক্ষণে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছে ৪ উইকেট।

এর পরের ৬ ওভারে মাত্র ২৯ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দেখে মনে হতেই পারে প্রতিযোগিতা হচ্ছে তাদের মাঝে, কে কার আগে ফিরতে পারে সাজঘরে। লিটন-মিরাজ একটুখানি বিশ্রাম নিয়ে ফের আগের ধারা অব্যাহত রাখেন মেহেদী মিরাজ। ১৩ বলে ১১ করে ফিরেন এই অলরাউন্ডার। আগের ম্যাচে দারুণ ব্যাট করা মোসাদ্দেক এই ম্যাচে ফিরেছেন কোনো রান না করেই। ৩ বলে ০ করে কেশভ মহারাজের শিকার তিনি। আর আরো একবার ব্যর্থ উইকেট কিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। শেষ ৪ ম্যাচে ৩৪ বলে মাত্র ১৯ রান করেছেন সোহান।

১৪ তম ওভারে দলীয় সর্বোচ্চ ৩১ বলে ৩৪ রান করে ফিরেন লিটন কুমার দাসও। লিটন ফিরে যাবার পর হাসান মাহমুদও ফিরে যান রান আউটের ফাঁদে পড়ে। তবে শেষ উইকেট জুটিতে ১২ রান সংগ্রহ করেন তাসকিন-মোস্তাফিজ। ১৬.৩ ওভারে তাসকিন ফিরে গেলে ১০১ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। মাত্র ১০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন এনরিখ নর্টজে।

এর আগে রাইলি রুশোর সেঞ্চুরিতে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ। তার ৫৬ বলে ১০৯ রানের ইনিংসে ভর করে ২০৫ রানের সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই তাসকিন টেম্বা বাভুমাকে ফিরিয়ে দিলেও দ্বিতীয় উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৪.৩ ওভার পর্যন্ত।

এর মাঝে দ্বিতীয় উইকেট জুটি কুইন্টন ডি ককের সাথে ৮৫ বলে ১৬৮ রানের অনবদ্য এক জুটি গড়ে তুলেন রাইলি রুশো। অবশেষে আফিফ হোসেনের বলে জুটি ভেঙে ডি কক যখন ফিরেন, ৩৮ বলে ৬৩ রান তখন নামের পাশে। এদিকে মাত্র ৫৩ বলে শতক স্পর্শ করেন রাইলি রুশো।

টি-২০তে প্রথম ব্যাটার হিসেবে টানা দুই ইনিংসে শতকের দেখা পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই ক্রিকেটার। এর আগে গত ৪ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৪৮ বলে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন রুশো। সেদিন যেখানে থেমেছিলেন, আজ সেখান থেকেই যেন শুরু করেছেন। অতঃপর সাকিব আল হাসানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১৯তম ওভারে ফিরেছেন ৫৬ বলে ১০৯ রানে।

মাঝে ট্রিস্টান স্টাবসকেও ফিরিয়েছিলেন সাকিব। পরে শেষ ওভারে এইডেন মার্করামকে ফেরান হাসান মাহমুদ। ততক্ষণে অবশ্য দলের রান ২০০ পাড়ি দিয়েছে। তবে শেষ ওভারে হাসান মাহমুদের দারুণ বোলিংয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানেই থামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট, দক্ষিণআফ্রিকা, বাংলাদেশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন