বাঘাইছড়িতে ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে ৬ ঘন্টাব্যাপী বন্দুক যুদ্ধ: নিহত ২, আটক ২

baghaichari

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি:
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার রাবার বাগান নামক স্থানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (সন্তু লারমা) গ্রুপের সাথে ইউপিডিএফ ও জেএসএস (সংস্কার পন্থী) গ্রুপের মধ্যে ৬ ঘন্টাব্যাপী বন্দুক যুদ্ধ হয়। এতে এ পর্যন্ত ২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। নিহত ২ জনের মধ্যে একজনের নাম বিপ্লব চাকমা (২৫)। অপরজনের নাম এখনও জানা যায়নি।

স্থানীয় এলাকাবাসি ও নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র জানা যায়, বুধবার সকালে ৮ টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত থেমে গোলাগুলি হয়। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০০/৬০০ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে। এই ঘটনায় আশেপাশের গ্রাম গুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ঘটনার পর বেলা আড়াইটার দিকে মারিশ্যা বিজিবি জোন থেকে দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকাগুলো ঘিরে তল্লাসী চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিজিবি এই সময় বাবুপাড়া এলাকা থেকে দুই গ্রামবাসি সুরেশ চাকমা(৪০) ও মনোতোষ চাকমা (৪৮)কে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে বাঘাইছড়ি থানায় সোপর্দ করেছে ।

বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ রফিক উল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এই ব্যাপারে খোজঁখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

এদিকে বিজিবি কর্তক সাধারণ দুইজন গ্রামবাসি আটক হওয়ার প্রতিবাদে বৃস্পতিবার বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ নামে একটি সংগঠন। অপরদিকে বিজিবি কতৃক দুইজন সাধারণ এলাকাবাসিকে আটক করার প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রেস বার্তা পাঠিয়েছে ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

সংগঠনটির প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের দায়িত্বে থাকা নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বার্তায় জানানো হয়, ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর বাঘাইছড়ি উপজেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠক সমশান্তি চাকমা ২৯ মে এক বিবৃতিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরের বাবু পাড়ায় বিজিবি সদস্য কর্তৃক বাড়িঘরে তল্লাশি ও দুই নিরীহ গ্রামবাসীকে আটকের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ২৯ মে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বিজিবির ৩৯ ব্যাটেলিয়নের জনৈক কমান্ডারের নেতৃত্বে একদল বিজিবি সদস্য বাবু পাড়ায় হানা দেয়। এসময় বিজিবি সদস্যরা পাড়ার বাসিন্দা মনতোষ চাকমা (৪৫) পিতা: সোনাধন চাকমা, সুরেশ কান্তি চাকমা (৪৮) পিতা: বাঙালি চরণ চাকমা, বেগোল চান চাকমা (৪৫) পিতা- চিত্তমোহন চাকমা ও অমর শান্তি চাকমা(৩৫) পিতা- অজিত কুমার চাকমা-এর বাড়ি তল্লাশি চালায়। ব্যাপক তল্লাশির পরও কোন কিছু না পেয়ে বিজিবি’র সদস্যরা ক্যাম্পে ফিরে যাবার সময় মনতোষ চাকমা ও সুরেশ কান্তি চাকমাকে ক্যাম্পে আটক করে নিয়ে যায়। বিকাল পর্যন্ত আটককৃতদের ছেড়ে দেয়া হয়নি। বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি ও অন্যায়ভাবে বাড়িঘরে তল্লাশি সহ নিপীড়ন-নির্যাতনে বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন।

অপরদিকে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বাঘাইছড়িতে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারের কর্মসূচি স্থগিতের ব্যাপারে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে আলোচনা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন