বাঘাইছড়িতে সূর্যমুখী ফুল থেকে তৈরি হবে তৈল

fec-image

বাঘাইছড়ি উপজেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে সূর্যমুখী চাষে সফলতা বয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই চাষীর মুখে হাঁসির শোভা পাচ্ছে। বাঘাইছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শক্রমে সূর্যমুখী চাষ পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মত শুরু করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই সূর্যমুখী চাষ করতে দেখা গেলেও তবে রাঙামাটিতে জেলার বাঘাইছড়িতে এই প্রথম হচ্ছে সূর্যমুখী চাষ।

সূর্যমুখী চাষ করতে হলে প্রথমত দানাগুলো পানিতে ১-২ রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। অঙ্কুর গজালে ১২-১৪ ইঞ্চি দূরে দূরে সারিবদ্ধভাবে চারার মত রোপন করতে হয়। এভাবে যে যত পরিমান জায়গায় চাষ করতে আগ্রহী সে তত পরিমান চারা রোপন করতে পারবে। বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারি ইউনিয়নের মগবান এলাকার স্নেহাংশু চাকমা ৩৩ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন।

রুপকারী মগবান এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও চাষী স্নেহাংশু চাকমা জানান, এই সূর্যমুখী চাষ সম্পর্কে সে প্রথম গুগল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধারণা গ্রহণ করে। পরে সেটি নিয়ে সে দীর্ঘদিন গবেষণা করেন। তারপর বাঘাইছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসাণর অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাও রুপকারি ইউনিয়ন মগবান ব্লকে কর্মরত কুন্তেল রায় চাকমা আমাকে চাষ করতে সহায়তা করেন। চাষ উপযোগি জমি বাচাই ও বীজতলা তৈরি, সার কিটনাশক ও বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেন। আমি ৩৩ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এই চাষ শুরু করেছি। চাষে সফলতা পেলে আগামীতে আরও চাষ করবো এবং প্রতিবেশীদের চাষ করতে উৎসাহিত করবো।

চাষী স্নেহাংশু চাকমা আরও বলেন, আমি গুগলে সার্চ দিয়ে সূর্যমুখী তৈল সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জেনেছি। সূর্যমুখী চাষে সফলতা বয়ে আনলে মানুষ আর সরিষার চাষ করবেনা। কারণ সূর্ষমুখী তৈল সরিষার তৈলের চেয়ে অনেকগুন ভাল ও উপকারি। সূর্যমুখী তৈল ব্যবহারে হার্ডের রোগ নিরাময় করে, এছাড়াও ক্ষতিকার কোন উপসর্গ নেই সূর্যমুখী তৈলে। প্রথমবারের মত ফলন মোটামোটি ভাল হয়েছে।

রুপকারী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কুন্তোল রায় চাকমা জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হতে প্রথমবারের মত প্রদর্শণীমূলক হিসেবে বাঘাইছড়িতে এই প্রথমবারের মত সূর্যমুখী চাষ শুরু করেন। এটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের একটি নতুন ও প্রদর্শণীমূলক সূর্যমুখী চাষ। এই চাষে সফলতা দেখা দিলে আগামী চাষীদের চাষ করতে উৎসাহিত করবো। তবে প্রথম চাষে ভাল ফলন দেখা গেছে। তারপরও চাষীকে আমরা বলেছি যদি সে বিক্রি করতে না পারে তাহলে কৃষি বিভাগ সূর্যমুখী গুলো ক্রয় করে নেবেন। সূর্যমুখী তৈল স্বাস্থ্য সম্মত বলে বিজ্ঞানীরাও বলেছেন। এটা সরিষার চেয়েও অনেক ভাল।

রুপকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্যামল চাকমা বলেন, আমার এলাকার সূর্যমুখী চাষ হওয়ার দূরদূরান্ত থেকে অনেক লোকজন দেখতে আসে তাই আমিও দেখতে এলাম। যদি এই চাষে সফলতা আসে তাহলে চাষিদের উৎসাহিত করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন