বাঘাইছড়ির আমতলী ইউপি তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের অচলাবস্থা
সাইফুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি:
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের সেবাদানের কোন পরিবেশ নেই। ফলে তথ্য ও প্রযুক্তিতে দেশ একধাপ এগিয়ে গেলেও আমতলী ইউনিয়বাসী পাঁচধাপ পিছিয়ে রয়েছে। তথ্য ও সেবা কর্মীরা নিজেদের বাসায় অথবা বাজারে তথ্য ও সেবাদানের পরিবর্তে সরকারী ল্যাপটপ দিয়ে মোবাইল মেমোরী কার্ড লোড করছে। তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে আসছেনা ঠিকমত। এদিকে এলাকাবাসীরা বিভিন্ন কাজের জন্য স্থানীয় ট্রলার বা লঞ্চযোগে ৮/১০ কিঃমিঃ দূরের বাজারে যাচ্ছে।
এ ব্যপারে আমতলী ইউপি তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের মহিলা উদ্যোক্তা শামসুন্নাহার আক্তারকে প্রশ্ন করলে সে জানায়, আমতলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের জন্য যে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে সেখানে তাদের বসার মত কোন পরিবেশ নেই। তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে অত্র ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য আলী হোসেনের পরিবার বাস করে। তাছাড়া তাদের যেসকল কার্যাবলী সম্পন্ন করে আয় করতে হয় তার প্রায় সবগুলোই পুরুষ উদ্যোক্তা এরশাদ আলীর কাছে। তাই মেমোরী কার্ড লোড করা ছাড়া তার আর কোন ইনকাম সোর্চ নেই। তবুও মাঝে মাঝে তথ্যসেবা কেন্দ্রে এসে একা একা সময় কাটাতে হয়।
এদিকে পুরুষ উদ্যোক্তা এরশাদ আলী তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলে, তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে যেসকল সেবা দেওয়ার কথা তার মধ্যে প্রায় সবগুলোই তারা দিচ্ছে। তবে তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের জন্য আমতলী ইউপি থেকে যে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে, তাতে তথ্য ও সেবাদানের কোন পরিবেশ নেই। তিনিও একই অভিযোগ করে বলেন, তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে অত্র ইউপি সদস্য আলী হোসেনের পরিবার থাকে।
তথ্যসেবা কেন্দ্র খালি করে দেওয়ার ব্যপারে অত্র ইউপি সদস্য আলী হোসেনকে প্রশ্ন করলে সে জানায়, যে স্থানটি তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের জন্য নির্ধারন করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ন খালি আছে। যেহেতু তার পিতা(মৃত) জায়গাটি আমতলী ইউপি কার্যালয়ের জন্য দান করেছিল, তাই পাশের ভিটাতেই তার ঘর রয়েছে। তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের মহিলা উদ্যোক্তা শামসুন্নার আক্তার মাঝে মাঝে আসলেও, পুরুষ উদ্যোক্ত এরশাদ আলী তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে আসে না। এরশাদ আলী তথ্য ও সেবা কেন্দ্রকে ইউপি কার্যালয় থেকে তাদের স্থানীয় বাজারে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বলেও জানান তিনি।
সরেজমিন প্রতিবেদনের জন্য গেলে জনৈক এলাকাবাসী জানায়, তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে জন্মনিবন্ধন, চেয়ারম্যান সনদ সহ অল্পকিছু সেবা দেওয়া হয়। তবে এগুলো তথ্য ও সেবা কেন্দ্র চালু হওয়ার পূর্বেও দেওয়া হত। ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য ও প্রযুক্তিভিত্তিক কোন সেবা দেওয়া হয় না। তথ্য সেবা কর্মীরা সব সময় অফিসে আসে না। জন্মনিবন্ধন ও চেয়ারম্যান সনদের জন্য তাদের বাড়ীতে যেয়ে বসে থাকতে হয়। এমনকি এতদূরের পথ যেয়েও মাঝে মাঝে তথ্যকর্মীকে বাড়িতে না পেয়ে ফেরত আসতে হয়। তারা যদি নিয়মিত তথ্য ও সেবা অফিসে বসত, তাহলে এত হয়রানি হতে হত না। এ ব্যাপারে তারা প্রশাসনের সাহায্য চায়।