বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ডাক্তার দিয়ে চলছে সিকিৎসা সেবা
বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:
রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারিভাবে ডাক্তার কোটা আছে ১৭ জনের মতো। তার মধ্যে কর্মরত আছে ৪ জন ডাক্তার।
বাঘাইছড়ি উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে ১ পৌরসভার মধ্যে প্রায় দেড় লাখ লোকের বসবাস। গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হলেও সিকিৎসা সেবা ঔষধ, পানি, রোগীদের খাবার মানসম্মত না থাকায় বঞ্চিত হচ্ছেন বাঘাইছড়িবাসী।
সরে জমিনে ঘুরে দেখা যায় ডা. বিষ্ণপদ দেবনাথ নামে একজন ডাক্তার দিয়ে চলছে সিকিৎসা সেবা। সকালে তিনি সিকিৎসা সেবা দিলেও বিকাল চারটায় তিনি নিজস্ব চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন রাত দশটা পর্যন্ত। এর পর তিনি রাতে হাসপাতালে রোগী দেখেন না, নিজ কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
মুসলিমব্লকের সুফিয়া বেগম(৫২) নামে অসহায় এক রোগী ভর্তি হতে চাইলে ভর্তি না করিয়ে তাকে একটি প্রেসক্রিপশন হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে যেতে বলেন।
ডা. রাজীব বডুয়া ২২ জানুযারি থেকে ২৪ জানুযারি দুই দিনের প্রশিক্ষণ ছিল ঢাকার মেন্টাল হসপিটালে। ২৫ তারিখ জয়েন করার কথা থাকলেও তিনি পাঁচ দিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন।
ডা. রুপশি চাকমা (ডেন্টাল) তিনি জয়েন করার পর থেকে ডেপুটেশনে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে কর্মরত আছেন।
ডা. নুয়েন খীসা উপজেলা স্বাস্হ্য কর্মকর্তা, তিনি ম্যালেরিয়ার উপর প্রশিক্ষণ নিতে ৩১ তারিখ পর্যন্ত থাকবেন চট্রগ্রামে।
জরুরী প্রসুতি সেবা ও এক্সরে কক্ষটি উদ্বোধন হয় ২০০৬ সালে এর পর থেকে এখনো পর্যন্ত তালাটি আর খুলতে হয়নি হাসপাতাল কর্তপক্ষের। এক্সরে মেশিনটি বক্স ভিতরে নিজে রোগীর মত পরে আছে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি। রোগী আসলে কিছু সময় পর রেফার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে। এক থেকে ১৫ তারিখের ভিতর ঔষধ পান না রোগীরা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন বলেন, ওষুধগুলো রাঙামাটি থেকে রিসিভ এর পর বাঘাইছড়ি হাসপাতালে আসে। কী কী ওষুধ স্টোর কিপারে ডুকলো তা তদারকি করার কেউ নাই। কাগজে কলমে চলছে হিসাব নিকাশ। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। ওষুধ পাবে অসহায় গরিব রোগীরা। রোগীদের সাথে ভালো ব্যাবহার করে না এমন অভিযোগ রয়েছে নার্সদের বিরুদ্ধে।
পূর্নদেবী চাকমা তাঁর বাড়ি পেরাছড়া গ্রামে তাঁর ১ বছরের কন্যা শিশুটি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। শিশুটিকে নিয়ে ভর্তি হয়েছিল গত রবিবার বিকাল চারটার দিকে। রাত্রে কোনো ডাক্তার আসেনি। নার্সরা এসে স্যালাইন দিয়ে গেছে। পরদিন সকালে সাড়ে আটটার দিকে ডাক্তার আসে। স্যালাইন ছাড়া হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ পাননি পৃর্ণদেবী চাকমা, তাই বাইরে থেকেই কিনতে হয়েছে।
হাসপাতালে সরকারিভাবে সিটিজেন চার্টার থাকার নিয়ম থাকলেও নেই হাসপাতালে। ডিউটিরত ডাক্তার নার্সদের একটি তালিকা থাকার কথা, কিন্তু তাও নেই হাসপাতালে। টয়লেটগুলো অপরিস্কার, গন্ধ ছড়িয়ে রোগীদের আরও সমস্যায় ফেলছে।
এব্যা পারে ডা. নুয়েন খীসার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটি প্রশিক্ষণে আছি। চট্রগ্রামে এত বড় উপজেলার মধ্যে আমি-সহ তিনজন ডাক্তার আছি। বিভিন্ন সময় আমার সরকারি কাজে বাহিরে থাকতে হয়। ১৭ জনের কোঠা থাকলেও ডাক্তার স্বল্পতাজনিত কারণে সিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের কষ্ট হয়। ওষুধ সরবারাহ কম হওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ আমরা রোগীকে ওষুধ দিতে পারি না।