parbattanews

খাগড়াছড়িতে শিক্ষামন্ত্রীকে বৃহত্তর পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের স্বারকলিপি প্রদান

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়িসহ তিন জেলায় জনসংখ্যানুপাতে সমান সুযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা হতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ, পিছিয়ে পড়া বাঙালি ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীকে চাকুরীতে নিয়োগ প্রদান করে বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করাসহ ১০ দফা  দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে স্বারকলিপি দিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকলে সার্কিট হাউজে বৃহত্তর পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মাসুম রানার নেতৃত্বে এ স্বারকলিপি দেওয়া হয়।

স্বারকলিপিতে ১৯৯৭ সালের চুক্তিতে পাহাড়ে শান্তির সু-বাতাস আসলেও নানান বৈষম্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী আসেনি। এখানে এখনো চারটি সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠন প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি, গুম/খুন ও রক্তক্ষয়ী সংঘাত পরিচালনা করে পার্বত্য অঞ্চলকে অশান্ত করে রেখেছে। এর ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কাঙ্খিত উন্নয়ন।

শিক্ষামন্ত্রীর সাহসী ও দক্ষ ভুমিকায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এসেছে এক আমুল পরিবর্তন। লেগেছে শিক্ষায় উন্নয়ন। মজবুত হয়েছে আগামীর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন। খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলায় সর্বমোট ৭ লক্ষের বেশি মানুষ বসবাস করছে।  তার ৫১ শতাংশের বেশি মানুষ বাঙালি ও ৪৯শতাংশ উপজাতি।

এই জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন ধর্মালম্বী বাঙালি, ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা ও সাওতাল, যোগী, তঞ্চঙ্গাসহ ৯টির বেশি জাতি গোষ্ঠীর বসবাস। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে পার্বত্য অঞ্চলকে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়। এর ফলে একটি সম্প্রদায়কে একচেটিয়া সাংবিধানিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে এগিয়ে দিলেও প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে বাঙালি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিসত্বা গুলো সম্পুর্নরুপে পিছিয়ে রয়েছে।

খাগড়াছড়িতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বাঙালি ও অন্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তা গুলো পিছিয়ে পড়ার জন্য জেলা পরিষদের বৈষম্যমূলক শিক্ষা ব্যবস্থার পরিচালনা, বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি, পরিষদের সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠার ভিত্তিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ বানিজ্য, মাধ্যমিক শিক্ষা ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন হয়নি।

বৃহত্তর পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, খাগড়াছড়ি জেলায়  ১টি পূর্নাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন,  খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় একটি করে পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে তিন বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ  এবং পর্যাপ্ত অবকাঠামোসহ সব বিষয়ের উপর স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর বিষয় পর্যায়ক্রমে চালু করা, খাগড়াছাড়ি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে অকাঠামোসহ ডিপ্লোমার বিয়য় বাড়ানো, জনসংখ্যানুপাতে  উপজাতি ও বাঙালিদের জন্য প্রতিটি  ইউনিয়নে একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, জনসংখ্যানুপাতে উচ্চমাধ্যামিক কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোর জন্য ১টি করে ছাত্রাবাস নির্মাণ, খাগড়াছড়ি জেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রচ্ছগ্রাম গুলোতে ১টি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন এবং যাতায়াতের জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ করা, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে জারীকরা উপজাতি কোটা বাতিল করে সকল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এবং বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর ভর্তির পথ নিশ্চিত করতে অসাম্প্রদায়িক পার্বত্য কোটা চালু করা, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগে সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এবং বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর  আনুপাতিক হারে নিয়োগ করা ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাস চালু করা।

Exit mobile version