parbattanews

বাঙালি বাদ দিয়ে পাহাড়িদের পুনর্বাসন না করার কঠোর হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

প্রকৃত আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ২৬ হাজার বাঙালি পরিবারকে বাদ দিয়ে ৮২ হাজার পাহাড়ি পরিবারকে আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু হিসেবে পুনর্বাসনে ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের প্রণীত তালিকা বাতিলসহ পাচ দফা দাবীতে আগামী ৯ অক্টোবর খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ও ১২ অক্টোবর খাগড়াছড়ি জেলা সদরে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালনসহ আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণার হুমকি দিয়েছে কয়েকটি বাঙালি সংগঠন।

সোমবার(১অক্টোবর) খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পার্বত্য অধিকার ফোরাম, বৃহত্তর পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নারী অধিকার ফোরামের নেতৃবৃন্দ এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। অন্যথায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচী দিয়ে পাহাড় অচল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। কর্মসূচীতে বিপুল সংখ্যক সাধারণ বাঙালিও অংশ নেয়।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু বিষয়ক টাস্কফোর্সের সভায় সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে প্রকৃত আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু  ২৬ হাজার বাঙালি পরিবার বাদ দিয়ে মিয়ানমার ও ভারতীয় ৮২ উদ্বাস্তু পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক মো. এস এম মাসুম রানা, পার্বত্য নারী অধিকার ফোরামের সভানেত্রী সালমা আহমেদ মৌ, চাঁদনি হাওলাদার ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।

এর আগে চেঙ্গী স্কোয়ার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে, উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ কর্তৃক ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে প্রণীত তালিকা বাতিল করা, বাঙালি নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনায় বসে প্রকৃত উদ্বাস্তুদের তালিকা প্রনয়ণ করা, ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯৬ সালে পর্যন্ত  শান্তিবাহিনীর  হামলায় ঘরবাড়ি হারানো  ও উদ্বাস্তু ২৬ হাজার বাঙালি পরিবারকে পূনর্বাসনের উদ্দ্যোগ গ্রহণ, খাগড়াছড়ি জেলায় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের ভূমি দখল মিশনে দখলকৃত রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের  সংখ্যালঘুদের দখল কৃত ভূমি ফেরত দেওয়া ও

রামগড়, মানিকছড়ি, সিন্দুকছড়ি ও উল্টাছড়ি সহ ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী দখলকৃত ভূমি উদ্ধারে প্রশাসনকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির শর্ত অনুসারে প্রায় ২২০০০ উপজাতী পরিবারকে বসত ভিটা, চাষের জমি, নগদ টাকাসহ ২০ দফা প্যাকেজ কর্মসূচীর আওতায় পুর্নবাসন করা হয়। সর্বশেষ ২১টি পরিবারকে ২০০৮ সালে খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালায় জামতলীতে পুনর্বাসন করা হয়। কিন্তু সন্তু লারমার নেতৃত্বে হত্যা ও  নির্যাতনে উদ্বাস্তু ২৬ হাজার বাঙালি পরিবারকে এখন পর্যন্ত পুনবার্সনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

বক্তারা বলেন, ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় পরিবারকে পুনর্বাসনের পর এ অঞ্চলে আর কোনো আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তু ছিলো না। এ অবস্থায় ১৬ বছরে কোথা হতে নতুন করে আরো ৮২ হাজার পরিবারের প্রায় ৪ লাখ উপজাতীয় উদ্বাস্তু পরিবার আসলো।

বক্তারা প্রণীত উদ্বাস্তু তালিকা যাচাই করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট আহবান জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের কাঙ্খিত জুম্মল্যান্ড  বানাতে  গোপনে মিয়ানমার ও ভারত থেকে উপজাতীয় পরিবারকে রাতের আধারে সীমানা পার করে আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু সাজানো হচ্ছে।

Exit mobile version