parbattanews

বান্দরবনে প্রশাসনের আশ্বাসে ফিরল ৩০ পরিবার: আতঙ্ক কাটেনি

Bandarban  pic-11.7.16
স্টাফ রিপোটার::
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের তালুকদার পাড়ায় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকিতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসা ৭০টি পাহাড়ী পরিবারের মধ্য ৩০ পরিবার প্রশাসনের আশ্বাসে ফিরেছে। তবে তাদের আতংক কাটেনি।

অন্য পরিবারগুলো এখনো আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছে। আবার অনেক পরিবার জেলা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।

প্রায় একশ বছর ধরে তালুকদার পাড়ায় ৭০টি পাহাড়ী পরিবার বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি জেএসএস সমর্থিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এলাকাবাসীদের নির্যাতন,অপহরণ ও চাঁদাবাজী এবং প্রান নাশের হুমকির কারনে আতংকিত হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে জীবন যাপন অতিবাহিত করছে।

পালিয়ে আসা পাহাড়ী পরিবারগুলোকে এলাকায় ফিরিয়ে নিতে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ উপলক্ষ্যে তালুকদার পাড়া বৌদ্ধ বিহারে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন, পাড়া কারবারী মং প্রু মার্মাসহ স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের দমন ও নিরাপত্তার শান্তিতে বসবাসের জন্য স্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপনের দাবী জানান। এবং তারা সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদানদেরও আটকের আহবান করেন।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে যা যা করা প্রয়োজন সব করা হবে। তিনি সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে স্থানীয়দের সহায়তাও কামনা করেন।

এলাকার কর্বারী মং প্রু জানিয়েছেন, প্রশাসনের আশ্বাসে প্রায় ৩০ পরিবার ফিরেছে। অনেকে আবাসিক হোটেলে ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। কিছু পরিবার জেলা সদরে বাড়ী ভাড়া নিয়েছে।

ইউপি সদস্য উটিমং জানান, প্রশাসনের আশ্বাসে সব পরিবার এখনো ফিরেনি। স্থায়ী সেনা ক্যাম্প হলে সবাই ফিরে আসতে পারে।

সভায় জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক স্থানীয়দের জন্য স্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপনের আশ্বাস দিয়ে সবাইকে এলাকায় ফিরে আসার জন্য আহব্বান জানান এবং পালিয়ে যাওয়া পরিবারগুরোর জন্য ২ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেন।

এদিকে তরাছা ইউনিয়নের ছাইঙ্গ্যা এলাকার বসবাসকারীরা অভিযোগে জানিয়েছেন, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারাছা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ সভাপতি ওমর ফারুক এলাকায় ডাক্তার হিসেবে পরিচিত। তিনি জেএসএস এর পক্ষ নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।

সূত্র জানায়, ওমর ফারুকের স্ত্রী নাছিমা আক্তার ইউপি নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে আওয়ামীলীগর সমর্থন না পেয়ে জেএসএস এর সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। এরপর থেকে এলাকায় আওয়ামী নেতা কর্মীদের সাথে ওমর ফারুকের দুরুত্ব সৃষ্টি হয়। এ বিষয় জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবিন্দের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুরহ না হওয়ায় আরো উদ্যামী হয়ে জেএসএস এর শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে মোবাইলে হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগ করেছে নেতা-কর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাদিক জানিয়েছেন, তালুকদার পাড়া ঘটনার পর থেকে বাঙ্গালী অধ্যাষিত ২নং ওয়ার্ডের অনেক বাসিন্দা ঘর ছাড়া। বাড়ি ঘরে আসলে তাদেরকে অপহরণ বা হত্যা করা হবে বলে মোবাইলে হুমকি দিয়ে আসছে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চাঁদাবাজির অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পাহাড়ের দুই শসস্ত্র গ্রুপ। এক পর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতির কারনে সন্ত্রাসীরা স্থানীয় আদিবাসীদের দায়ী করে ক্ষুদ্ধ হয়ে মারধর করে। পরে দফায় দফায় হত্যার হুমকির কারনে তারা এলাকা ছেড়ে বান্দরবান শহরে আশ্রয় নেয়। এঘটনায় পুলিশ অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী বিমল চাকমাকে আটক করে এবং তিনটি মামলা দায়ের করে।

Exit mobile version