parbattanews

বান্দরবানের বাইশারীতে নবনির্মিত সড়কে ধ্বস: অনিয়মের দায় কার?

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নারিচবুনিয়া-বাকখালী সড়কের কাজ এখনো শেষ হয়নি। কয়েক প্যাকেজে সড়কটির উন্নয়ন কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। সম্প্রতি পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে নবনির্মিত ৩কিলোমিটার কার্পেটিং সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধ্বস নেমেছে। এই নিয়ে দুই ঠিকাদারের মধ্যে দেখা দিয়েছে নিরব বিরোধ। ‘নিজেদের মধ্যকার’ কাজের বিষয়টি পুনরায় সংষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এলজিইডি। তবে এই ঘটনার দায় কার প্রশ্ন তোলেছেন স্থানীয়রা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে- জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের সাথে দোছড়ি ইউনিয়নকে সংযুক্ত করতে নারিচবুনিয়া-বাকখালী সংযোগ সড়কটি নির্মিত হচ্ছে। গেল অর্থ বছরে নারিচবুনিয়া অংশে ৩কোটি টাকা ব্যায়ে ৫কি:মিটার সড়কের কাজটি করেছেন বান্দরবানের ঠিকাদার জসিম উদ্দিন। চলতি বছরে অপর একটি প্যাকেজে ৫কিলোমিটার সড়কের কাজ পেয়েছেন আলীকদমের ঠিকাদার জুলফিকার আলী ভুট্টু ও মনসুর আলম সিন্ডিকেট।

সম্প্রতি অতিরিক্ত পাহাড়ি পাথর বোঝাই ট্রাকের কারণে নবনির্মিত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধ্বস নেমেছে। যার কারণে চলমান ও বাস্তবায়িত এমন নিম্মমানের উন্নয়ন কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ও জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান- ছাগলখাইয়া এলাকায় বর্তমানে জুলফিকার আলী (ভুট্টু) ও মো: মনসুর আলম (ভুট্টু-মনসুর সিন্ডিকেট) সড়ক উন্নয়নের কাজ করছে। তাদের চলমান প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য পাহাড়ি পাথর বোঝাই ট্রাকের কারণে ৩ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ধ্বস ও ফাটল দেখা দিয়েছে। যার কারণে এর আগে স্থানীয় জনতা ৩০ টনের ১৩ টি ট্রাক বটতলী বাজারে আনলোড করতে বাধ্য করে ঠিকাদারদের।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জব্বার, মোঃ হাবিবসহ অনেকেই জানান- ঠিকাদারকে নিষেধ করা সত্বেও তারা ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করেনি। অথচ অন্যান্য ঠিকাদার ভারী মালামাল বাজারের পাশে খালাস করে হালকা যানবাহনে করে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যান। এই প্রসঙ্গে নারিচবুনিয়া সড়কে বাস্তবায়িত কাজের ঠিকাদার জসিম উদ্দিন বলেন- সড়কে ভারী যানবাহন নেওয়ার কারণে নবনির্মিত সড়কটি ধ্বসে গেছে। এই বিষয়টি তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অবহিত করেছেন। ভেঙ্গে যাওয়া অংশগুলো ঠিকাদার ভুট্ট-মনসুর মেরামত করে দিবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্যদিকে অভিযুক্ত ঠিকাদার জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন- ‘সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে যানবাহন চলাচলের জন্য’। সড়কে ভারী যানবাহন নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, ১০ টনের ট্রাক নিয়ে মালামাল নিয়েছেন তিনি।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন- গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে মালামাল বোঝাই ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে তিনিও উদ্বিগ্ন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নিকট অবগত করবেন।

ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মোঃ আবুল কালাম জানান- ঠিকাদার ভুট্টো ও মনসুর ইচ্ছে করে ভারী যানবাহন ঢুকিয়ে সরকারি রাস্তাটি ধ্বংস করেছে। তিনি বিষয়টি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান- ভুট্টু-মনসুর দীর্ঘদিন ধরে নিম্মমানের কাজ করে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন- ধ্বসে যাওয়া এবং ফেটে যাওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঠিকাদার ঐ জায়গাগুলো পুনরায় ঠিক করে দিবেন। তবে গ্রামীন সড়কে ১০ টনের অধিক মালামাল নিয়ে যানবাহন চলাচল করা যাবেনা।

Exit mobile version