বান্দরবানের ৪০ লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও সিয়াম মাল্টিপাস ও আল আমিন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি

corruption2

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বান্দরবানের সিয়াম মাল্টিপাস ও আল আমিনওয়েল ফেয়ার সোসাইটি নামক দুটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। জানা যায় গত পাঁচ মাস আগে সিয়াম মাল্টিপাস কো- ম্যানেজার মো. শাহ আলম প্রায় ৯০০ গ্রাহকের ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে বান্দরবান জেলা শহর থেকে উধাও হয়ে যায়। তারই পথ ধরে কয়েক সপ্তাহ আগে আল আমিন ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি অফিসটি বন্ধ করে উধাও হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক। শতশত গ্রাহক তাদের আমানত ফিরিয়ে পেতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

একাধিক গ্রাহকদের সুত্রে জানা যায়, বেসরকারী বিভিন্ন এনজিও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানগুলো বাহারী সাইন বোর্ড এবং সুশজ্জিত অফিসের মাধ্যমে জনগনের দৃষ্টি আকর্ষন করে থাকে। স্বল্প বেতনে তারা কিছু কর্মচারী নিয়োগ করে বিভিন্ন পাড়ায় মহল্লায় এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর গুনগান প্রচারনা করে জনগনকে আকৃষ্ট করে থকে। এসব ভুঁইফোড় এনজিও গুলোর সরকারী তদারকি এবং সমন্নয়হীনতার অভাবে জনগনের সাথে প্রতারনা করার সুযোগ পায়।

সিয়াম মাল্টিপাস সংস্থার ম্যানেজার মো. শাহ আলম এবং আল আমিন ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির ম্যানেজার শাহাব উদ্দিন। শাহব উদ্দিন যিনি জনস্বাস্থ প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তফার ভাই। এই দুই এনজিও সংস্থা ইতিমধ্যেই জনগনের আমানতের প্রায় ৪০ টাকা নিয়ে ইতিমধ্যেই লাপাত্তা হয়ে গেছে। এনজিও সংস্থা সিয়াম মাল্টিমিডিয়ার  গ্রাহক আবুল হাসেম জানান দৈনিক ১ শত টাকা করে সঞ্চয় জমা করে ৩২ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এধরনের আরো বহু গ্রাহক রয়েছে যাদের হাজার হজার টাকা জমা করেছে। সিয়াম এনজিও সংস্থাটি বন্ধ করে বান্দরবান থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছে।  

অপরদিকে আল আমিনওয়েল ফেয়ার সোসাইটি নামক একটি এনজিও সংস্থা বান্দরবানের সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে রাইটার নুরুল আমিনের বিল্ডিং এর নীচতলায় অফিস ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করে। সংস্থাটির গ্রাহক শাহাব উদ্দিন জানান, আল আমিনের ম্যানেজার শতশত গ্রাহকের প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা সঞ্চয়ের টাকা জমা রয়েছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠান হটাৎ করে রাতের অন্ধকারে শতশত গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এসব এনজিও সংস্থা সমুহের প্রশাসনের সঠিক তদারকি না থাকা তারা গ্রহকের সাথে প্রতারণা করার সুযোগ পায়।

এ ব্যাপারে বান্দরবানের সদর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ফাতেমা বেগমের সাথে আলাপ করতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে আলাপ করতে অস্বিকৃতি জানান। কয়েকজন গ্রাহক জানান সমাজ সেবা অফিস কর্মকর্তাদের সাথে প্রতারক এনজিও গুলোর সখ্যতা থাকায় তারা বার বার জনগনের টাকা নিয়ে প্রতারণা করার সুযোগ পায়।

অপর দিকে সোস্যাল প্রোগ্রেসিভ সোসাইটি ও প্রেরনা মাল্টি পারপার্সের শতশত গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। তারাও জনগনে অর্থ নিয়ে কোন মুহুর্তে তারাও পালিয়ে যেতে পারেন বলে অনেকে ধারনা করছেন।

অভিজ্ঞ মহলের ধারণা অবৈধ অর্থের বিনিময়ে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে রাতারাতি এনজিও সংস্থাগুলোর অনুমোদন দিয়ে থাকে। এসব এনজিওগুলোর তদারকি না থাকায় জনগনের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার সুযোগ পায়। এনজিও সংস্থা গুলো বান্দরবানকে একটি অতিরক্ত অর্থ লাভের স্বর্গ রাজ্য হিসাবে বেছে নেওয়ায় স্বল্প আয়ের সাধারণ গ্রাহকরা প্রতারনার স্বীকার হচ্ছে। এসব এনজিও গুলোর বিরুদ্দে আইনি ব্যাবস্থা নেওয়র দাবী করছে ভুক্তভোগীরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন