parbattanews

বান্দরবানে আ’লীগ নেতা চথোয়াইকে খুনই করা হলো!

নিহত চথোয়াই মং মারমা এর ছবি

খামারবাড়িতে বসে গল্পগুজব করছিলেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা চথোয়াই মং মারমা। রাত ঘনিয়ে আসার পর হঠাৎ করেই অস্ত্রধারী দুষ্কৃতিকারীরা খামার বাড়িতে হানা দিয়ে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

দুস্কৃতিকারীদের মধ্যে একজনের দেওয়া কথা মতো পরিবারের ধারণা ছিলো চথোয়াইকে কোন কিছু জিজ্ঞাসাবাদের পর অস্ত্রধারীরা হয়তো ছেড়ে দিবে। কিন্তু অপহরণের ৩ দিন পর শনিবার (২৫ মে) সকালে চথোয়াই মং এর লাশ মিলল গহীন পাহাড়ে।

শনিবার (২৫ মে) সকালে অপহরণস্থল খামারবাড়ি থেকে প্রায় ২ কি.মি. দূরে রাজবিলা ইউনিয়নের জর্দানপাড়ার ভিতরে গহীন অরণ্যে এলাকাবাসী তার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

সাবেক পৌর কাউন্সিলর নিহত আওয়ামীলীগ নেতা চথোয়াই মং মারমা বান্দরবান পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মৃত মংমং মারমার ছেলে।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর জানান, চথোয়াই মং মারমা গত বুধবার রাতে উজি হেডম্যানপাড়ায় নিজ খামার বাড়ি থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত হন। শনিবার সকালে খামারবাড়ি থেকে প্রায় ২ কি.মি. দূরে জর্দানপাড়া গহীন অরণ্যে এলাকাবাসী তার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

পরে বান্দরবান থানা পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ এলাকাবাসী দুপুর ২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

এ বিষয়ে বান্দরবান সদর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, জর্দানপাড়ার ভিতরে পাহাড়ে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা খবর দিলে দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত লাশটি চথোয়াই মং বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে চথোয়াই মং মারমার নি:শর্ত মুক্তি চেয়ে শনিবার (২৫ মে) সকালে মানববন্ধন করেছে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগ। মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ আগামীকাল রবিবার (২৬ মে) হরতালের ডাক দিয়েছিলো।

বান্দরবানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ধারাবাহিক খুনের তালিকায় আরও একটি সংযোজন হলো। খুন হওয়া বিনয়, জয়মনি, ক্যাচিং থোয়াই এর নামের পাশে যুক্ত হলো চথোয়াই মং মারমার নামও। কিন্তু আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ধারাবাহিক খুনে কেন নিরীহ এই মানুষগুলোর প্রাঁণ কেড়ে নেওয়া হলো তা এখনো জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে পাহাড়ের অস্ত্রধারী দুষ্কৃতিকারীরা এই কিলিং মিশন চালাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ১৮ মার্চ রাঙ্গামাটিতে সন্ত্রাসী হামলায় ৭ খুনের ঘটনার পর থেকে বান্দরবানেও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের আনা গোনা বৃদ্ধি হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুনের পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে বান্দরবানে এসব ধারাবাহিক কিলিং চলছে। এসব ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জেএসএস ও মগ লিবারেশন পাটিকে দায়ী করছে স্থানীয়রা। তবে তাদের কিলিং মিশনে কেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের খুন করা হচ্ছে তা এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেলো!

Exit mobile version