স্টাফ রিপোর্টার:
পাহাড় কন্যা বান্দরবানে ৪ দিনব্যাপী আয়োজিত মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব মাহাসাংগ্রাই বা পানি খেলা (মৈত্রী পানিবর্ষণ) বর্ণিল আয়োজনে বৃহস্পতিবার সমাপ্ত হয়েছে। তরুণ তরুণীদের পাশাপশি শিশুরাও এ উৎসবে মেতে উঠেছে। শিশুরা দলবেঁধে টমটম, রিক্সা ভাড়া নিয়ে শহরের রাস্তায় রাস্তায় পদচারী আর পর্যটকদের পানি ছিটিয়ে আনন্দ উপভোগ করেছে।
জলকেলী উৎসবের আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে— পানি খেলায় বিবাহিতরা অংশ নিতে পারেন না। মারমা তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে ভাবের আদান-প্রদান করেন। এ উৎসবের মাধ্যমে পাহাড়িয়া তরুণ-তরুণীরা সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
অন্যদিকে ধর্মীয় উপসানালয় গুলোতে চলে ধর্ম দেশনা। শীল গ্রহণ, বুদ্ধ পূঁজা দাণীয় দ্রব্য (মিষ্ঠান্ন, ফলমূল) দান, হাজার মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন সবশেষে চুলমনি জাদীর উদ্দ্যেশ্যে ফানুস উড়িয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়েছেন।
এ উপলক্ষে পাহাড়ী পল্লীগুলোতে তরুণ-তরুণীরা সারিবদ্ধভাবে বসে হরেক রকমের পিঠা বা পুলি তৈরী প্রতিযোগিতায় মেতে উঠে। সারা রাত পিঠা তৈরী করে পরের দিন সকালে পাড়ার প্রতিবেশী, আত্মীয় সজন ও ধর্মীয় উপশনালয়ে ভিক্ষুদের উদ্দ্যেশ্যে পাঠানো হয়।
মারমা অনুসৃত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৩৭৭ সক্রয় সালের প্রথম দিন হচ্ছে শুক্রবার ১৭ এপ্রিল। পুরোনো বছরের সব গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন বছরকে আবাহনের লক্ষ্যে প্রথমে ‘আসাং ম্র’ বা জীবন্ত বুদ্ধমূর্তিকে স্নান করানো হয়।
পুরাতন বর্ষকে বিদায় আর নতুন বর্ষকে বরণ করার এই উৎসবকে মারমা সম্প্রদায় প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে পালন করে আসছে যুগযুগ ধরে।