টানা বৃষ্টিপাতে বান্দরবানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা: পাহাড়ি ঢাল থেকে নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং
স্টাফ রিপোর্টার:
টানা তিন দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাহাড়ি ঢাল ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে বসবাসকারীদের অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এবং জরুরী সেবা কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্কাবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার জন্যে আজ রবিবার সকাল ১০টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।
এদিকে, বান্দরবান মৃত্তিকা সংরক্ষণ ও পানি ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (এসআরডিআই) গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। এসআরডিআই-র উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিন যাবৎ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাহাড়গুলোর উপরিভাগ শুকিয়ে ছিল। এ কারণে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া লাগাতার ভারি বৃষ্টিপাত পাহাড় ধসের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। তিনি জানান, জুন মাসের শুরু থেকে গত ১৯ দিনে এই জেলায় মাত্র ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, বান্দরবান পৌর এলাকার ইসলামপুর, লাঙ্গিপাড়া, শেরেবাংলা নগর, নোয়াপাড়া, কালাঘাটা, লেমুছড়ি এবং রাজার ঘোণা এলাকায় পাহাড়ের ঢালে গড়ে তোলা বাড়ি-ঘর গুলো যে কোনো সময় বড় ধরনের বিপদের মুখোমুখি হতে পারে। স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন সময়ে এসব এলাকায় পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাড়ি নির্মাণে প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্দেশ মানা হচ্ছে না।
এদিকে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারি ও সদর ইউনিয়নেও টানা বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারীদের দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রে বা নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। দুই বছর আগে ২০১২ সালে পাহাড়ধসে বাইশারি ইউনিয়নে চারজনের প্রাণহানি ঘটে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক জানান, এ ধরনের বিপর্যয় এড়াতে পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারীদের সরিয়ে দিতে এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।