parbattanews

বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি; সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বান্দরবান সদরের নিম্ম এলাকা প্লাবিত হওয়ার দৃশ্য

গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ এখনো অব্যাহত রয়েছে বান্দরবানে। টানা এই বর্ষণের ফলে পাহাড়ী এই অঞ্চলে মানুষের জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে পাহাড়ী ঢল ও নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। টানা তিনদিনের মতো আজও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে জেলা শহরে।

সরেজমিন ঘুরে ও বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা বর্ষণ ও সাঙ্গু নদীতে উজানের পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলা শহরের আর্মিপাড়া, ইসলামপুর, শেরে বাংলা নগরে কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী পাড়াগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডুবে গেছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এদিকে জেলা সদর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় নদী, ঝিরি এবং পাহাড়ী ঢলের পানিতে নিম্ম এলাকা প্লাবিত হয়েছে। লামা পৌরসভার নুনারবিল, বাজারপাড়া, নয়াপাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে থানা সদর, বড় নুনারবিলসহ অন্যান্য নিম্ম এলাকাগুলো প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের ধুংরী হেডম্যানপাড়া, বড়ুয়াপাড়া ও ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু কোণারপাড়া, বাইশারীর নারিচবুনিয়া এলাকায় নদী ও পাহাড়ী ঢলের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
থানচি উপজেলা সদরের ব্রিজের নিচে নতুনপাড়া এলাকায় নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ওই পাড়াটি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও থানচি বাজারের পূর্ব পাশে টিএন্ডটি পাড়া এলাকাটি পাহাড় ধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে।

আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান- রেফারফাড়ি ইউপি সংলগ্ন এলাকা, লাইনঝিরি ও শিবাতলীপাড়া এলাকায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আলীকদমের সাথে চকরিয়ার মূল সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। উপজেলা সদরের খুইল্লামিয়াপাড়ায় বেশ কয়েকটি বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেলেও এখনো পানি কমেছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নিম্ম এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে টানা তৃতীয় দিনের মতো আজও বান্দরবান জেলা সদরের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের বাজালিয়া বড় দুয়ারায় প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের কোন যানবাহন আসা যাওয়া করতে পারছেনা। ভ্যানগাড়িযোগে অনেকে পারাপার হচ্ছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম জানান, বন্যা ও দূর্যোগে যেকোন ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এছাড়াও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং অব্যাহত রয়েছে। আশ্রয় নেওয়া মানুষের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

Exit mobile version