বান্দরবানের টানা ছয়দিনে ভারী বর্ষণে জেলা সদরে ৬০ শতাংশ, লামা উপজেলায় শতভাগ বন্যা কবলিত হয়েছে। বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এঘটনায় এক বিদেশি নাগরিকসহ নিহত হয়েছে দুজন, আহত শতাধিক।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বান্দরবানের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সড়ক, বসতবাড়িসহ পাহাড় ধসে পড়েছে।
বান্দরবান জেলা সদরের ৬০ শতাংশ ও লামা উপজেলার শতভাগ এলাকা বন্যাকবলিত হয়েছে।
জেলার ২০৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে ৯ হাজার মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, সেখানে প্রশাসন থেকে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ইন্টারনেট সরবরাহ বন্ধ রয়েছে । সেই সাথে বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার অতিক্রম করছে।
বান্দরবানের খ্যাদ্য সামগ্রীর দাম দ্বিগুণ বেড়েছে, তবে এই বিষয়ে বান্দরবান বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিমল কান্তি দাশ জানিয়েছেন, খাদ্যদ্রব্যের সংকট না থাকলেও বাজারে ডিম ও মোমবাতির সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানায়, পাহাড় ধসে আলীকদম উপজেলায় একজন ও নাইক্ষ্যংছড়িতে একজন মারা গেছেন, নিহতদের মধ্যে একজন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন। তবে তাদের বিষয়ে বিস্তারিত পরিচয় জানা যায় নি।
জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলার ৭ উপজেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সাথে, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল প্রশাসনসহ সকল সরকারি প্রশাসন যৌথভাবে সার্বিক কাজ করে যাচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে মেডিকেল টিমও কাজ করছে। সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে ৫টি ওয়ার্ললেস সেট দিয়েছে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য। জেলা পরিষদকেও সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বান্দরবান সদরের চেয়েও লামা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, লামা স্বাস্থ্য কমল্পেক্স, লামা উপজেলা পরিষদ, খাদ্যগুদাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ৮৫ মেট্রিক টন চাল, ত্রাণ ও অর্থ বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। তিনি ত্রাণ ও দুর্যোগ মহাপরিচালকে অনুরোধ পত্র পাঠিয়েছেন , যাতে বরাদ্ধটা বেশি এবং দ্রুত দেওয়া হয়। এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি। অতিদ্রুত ক্ষয়ক্ষতির নিরুপণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।