বান্দরবানে বর্ষবরণ উৎসব শুরু আগামীকাল

নিউজ ডেস্ক:

বান্দরবানে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে। বাংলা নববর্ষ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব। চলবে ২১ দিন।

বর্ষবরণ উৎসবের মূল আকর্ষণ মারমা জনগোষ্ঠীর ‘মৈত্রী পানিবর্ষণ’ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ ও ১৬ এপ্রিল বিকেলে বান্দরবান শহরের বোমাং রাজার মাঠে।

এর আগে ১৩ এপ্রিল সকালে সাংগ্রাইং উপলক্ষে ‘সম্প্রীতির শোভাযাত্রা’ ও ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) বাংলা বর্ষবরণ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের (কেএসআই) তত্ত্বাবধানে এ উৎসবমালার আয়োজন করা হচ্ছে।

কেএসআইয়ের পরিচালক মং নু চিং জানান, ৪ ও ৫ এপ্রিল কেএসআইয়ের বিভিন্ন মিলনায়তনে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা দিয়ে উৎসবমালার সূচনা ঘটবে। ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠী এতে অংশ নেবে।

৬ এপ্রিল কেএসআই অডিটরিয়ামে হবে বর্ষবরণ উপলক্ষে দিনব্যাপী সেমিনার।

এবারের বিষয় ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন: লোকসংস্কৃতির অনন্য ধারা’।

এছাড়া ৯ এপ্রিল কেএসআই আয়োজিত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, ১১ এপ্রিল সকালে টংকাবতী ব্রিক ফিল্ড এলাকায় ম্রো জনজাতির বর্ষবরণ উৎসব ‘চাংক্রান’ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়ানুষ্ঠান এবং গো-হত্যা নৃত্য প্রতিযোগিতা, বিকেলে বান্দরবান পৌর এলাকার বালাঘাটা চিত্রসেন বৈদ্যপাড়ায় চাকমাদের পাজন রান্না প্রতিযোগিতা, ১২ এপ্রিল সকালে রোয়াংছড়ি উপজেলার অন্তাহা ত্রিপুরাপাড়ায় ত্রিপুরাদের বর্ষবরণ উপলক্ষে গড়াইয়া নৃত্য ও ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিকেলে বান্দরবান পৌর এলাকার বালাঘাটা বিলকিস বেগম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তঞ্চঙ্গ্যাদের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা, ১৭ এপ্রিল সকালে সদর উপজেলার রাজবিলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মারমাদের সাংগ্রাইং উৎসব উপলক্ষে লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ১৯ এপ্রিল সদর উপজেলার জামছড়িপাড়ায় মারমাদের সাংগ্রাইং উপলক্ষে মৈত্রী পানিবর্ষণ, ২০ এপ্রিল রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা লং থানপাড়ায় খুমি জনজাতির সাংক্রাইং উপলক্ষে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

বর্ষবরণ উৎসবের নাম : মারমা জনগোষ্ঠীর ‘সাংগ্রাইং’, চাকমা জনগোষ্ঠীর ‘বিজু’, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর ‘বিষু’, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ‘বৈসু’ বা ‘বৈসুক’, ম্রো জনগোষ্ঠীর চাংক্রান, খুমি জনগোষ্ঠীর ‘সাংক্রাইং’, চাক জনজাতির ‘সাংগ্রাইং’ এবং খেয়াং জনগোষ্ঠীর ‘সাংরান’। এসব উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি অনেক সংস্কৃতিপিপাসু, গবেষক ও পর্যটক বান্দরবান ভ্রমণ করে থাকেন।

রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা:

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব ‘বৈসাবি’র আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল)। উৎসব চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।

মঙ্গলবার রাঙামাটিতে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক ও বিষু (বৈসাবি) উপলক্ষে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে আলোচনাসভা, মেলা ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়।

বিকেলে ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার।

বিশেষ অতিথি ছিলেন সেনাবাহিনী রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ রিয়াদ মেহমুদ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম শফি কামাল। স্বাগত বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রুনেল চাকমা।

ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া মেলা চলবে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এতে স্থানীয় নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী খাবার, পোশাক ইত্যাদি প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলায় বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করে।

এছাড়া মেলায় রয়েছে চিত্রাঙ্কণ ও খেলাধুলার প্রতিযোগিতা, নাটক মঞ্চায়ন, পাঁচন রান্না, কবিতা পাঠসহ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ।

মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। সূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বান্দরবানে বর্ষবরণ উৎসব শুরু আগামীকাল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন