parbattanews

বান্দরবানে রাজপুণ্যাহ ২১ ডিসেম্বর!

bandarban-king-copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বান্দরবান বোমাং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী খাজনা আদায়ের উৎসব ১৩৯তম রাজপুণ্যাহ মেলা আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে স্থানীয় রাজার মাঠে তিন দিনব্যাপী শুরু হবে।

রাজ প্রসাদ-রাজ সিংহাসন না থাকলেও এদিন রাজকীয় আচার আচরন এবং রীতি রেওয়াজ পালন করে প্রজারা মাথা ঝুঁকিয়ে রাজা বাহাদুরকে প্রণাম করে জুমের বাৎসরিক খাজনা প্রদান করেন। বাৎসরিক খাজনা আদায়ের উৎসবকে মার্মা সম্প্রদায়ের কাছে রাজপুণ্যাহ উৎসব ‘পইংজারা’ নামে পরিচিত।

বান্দরবানের বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরীর সহকারী অং ঝাই বলেন, আগামী ২১ ডিসেম্বর পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

১৩৯ তম রাজ পুণ্যাহ পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। এ ছাড়া দেশি- বিদেশী পর্যটকরাও সেখানে ভিড় জমান।

পার্বত্য চট্টগ্রামে তহশিলদার প্রথা নেই। সরকারের পক্ষে রাজারাই বার্ষিক খাজনা আদায় করেন। আদায়কৃত খাজনার ৩৭ শতাংশ রাজা, ৩৭ শতাংশ মৌজা হেডম্যান এবং অবশিষ্ট অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। সরকারের পক্ষে ভূমিকর আদায় উপলক্ষে বোমাং সার্কেলে প্রতিবছর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। রাঙামাটি জেলার ১৪টি মৌজাসহ বোমাং সার্কেলভুক্ত ১০৯টি মৌজার হেডম্যান-কার্বারিরা রাজপ্রথা অনুসরণ করে এদিনে সার্কেল চিফ বা রাজাকে আনুষ্ঠানিক প্রণাম জানিয়ে কর পরিশোধ করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃটিশ শাসনামলে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলাকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করে খাজনা আদায় করা হতো। ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত চাকমা রাজা পার্বত্য এলাকা শাসন করতো। ১৮৬৭ সালে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের মারমা অধ্যুষিত এলাকাকে বোমাং সার্কেল, ১৮৭০ সালে রামগড় ও মাইনি উপত্যকার এলাকাকে নিয়ে মং সার্কেল গঠিত হয়। এ সময় রাঙামাটিকে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানকে বোমাং সার্কেল এবং খাগড়াছড়িকে মং সার্কেল করা হয়।

প্রায় ১৭৬৪ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে বান্দরবান বোমাং সার্কেল। দুইশ বছরের ঐতিহ্য অনুসারে বছরে একবার এই মেলার আয়োজন করা হয় বোমাং সার্কেলের পক্ষ থেকে।

Exit mobile version