parbattanews

বান্দরবানে রুমা ও থানচির মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌপথ

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বান্দরবান জেলার সর্বত্র। কৃষি, মৎস্য ও যোগাযোগসহ সকল ক্ষেত্রে এবারের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপকভাবে।

এদিকে পাহাড়ি ঢলে আর বন্যার পানিতে সড়ক ধসে পড়ার কারণে টানা ১৫ দিন ধরে বান্দরবান জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে রুমা ও থানচি উপজেলার।

সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরপরই সেনাবাহিনীর সদস্যরা রুমা ও থানচি সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া বিভিন্নস্থানের সড়ক মেরামতে কাজ করে যাচ্ছে। আর খুব দ্রুত সময়ে বান্দরবানের সাথে রুমা ও থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ আবার সচল হওয়ায় আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর থেকে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সাংগু নদীতে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে দুই উপজেলায় যাতায়াত করছে সাধারণ যাত্রীরা। দুই উপজেলার নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল, খাদ্য সামগ্রীসহ সকল রশদ এখন জেলা সদর থেকে যাচ্ছে নৌপথে।

এদিকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরপরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীপথে যাতায়াতের জন্য নৌকা ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। আর জেলা সদর থেকে রুমা উপজেলায় যেতে ৩৫০ টাকা ও ফেরত আসতে ৩০০টাকা এবং থানচি উপজেলা যেতে ও ফেরত আসতে ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন পরে সাংগু নদীতে নৌকা চলাচল শুরু করার পরপরই চাকুরীজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার জনসাধারণ নৌকাযোগে চলাচল শুরু করে।

রুমা থেকে বান্দরবান সদরে আসা নৌকার যাত্রী মো. বেলাল বলেন, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় আমাদের প্রচুর কষ্ট হচ্ছে, নদী পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। নদীপথে নৌকায় ভ্রমন করতে গিয়ে নানাধরণের অসুবিধা হচ্ছে আর দ্রুত সড়ক মেরামত হলে আমাদের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।

বান্দরবান জেলা সদরের সাঙ্গু নদীর ঘাটে দায়িত্বে থাকা নৌকার লাইনম্যান ও মো. বুলবল জানান, প্রশাসনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে জনগণের সাময়িক অসুবিধা দুর করতে আমরা সাংগু নদীতে নৌকা চলাচল শুরু করেছি এবং নৌকা চলাচল শুরু করার পর প্রতিদিন অনেক যাত্রী নদী পথে রুমা ও থানিচ উপজেলা যাতায়াত করছে।

মো. বুলবল আরও জানান, প্রায় ১৭-২০ টি নৌকা বর্তমানে নদীতে রয়েছে এবং ভোর ৫ টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নদীতে নৌকা চলাচল করে। প্রতি নৌকায় ১০ জন করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে এবং রুমা উপজেলায় বেশি যাত্রী আসা যাওয়া করছে নিয়মিত।

বান্দরবান জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, গত ৬ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত টানা বৃষ্টি আর বন্যায় বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধস ও পানিতে ভেসে ১১জন নিহত ও ৩১ জন আহত হয়েছে আর পাহাড় ধসে ১৪০৬টি ঘর সম্পূর্ণ ও ৫১৭৩টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার অসংখ্য সড়ক। এর মধ্যে ৩০০ কিলোমিটার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি), ২২ কিলোমিটার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের এবং ১৫ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ বিভাগের।

বান্দরবান সড়ক বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দীন চৌধুরী জানান, রুমা ও থানচির সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টের ভাঙ্গা অংশ সংস্কার কাজে নেমেছে সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন (২০ ইসিবি)। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে শীঘ্রই রুমা ও থানচি সড়কে যান চলাচল শুরু হবে বলে আমাদের আশাবাদ

Exit mobile version