parbattanews

বান্দরবানে ‘সাংগ্রাইং’ উৎসব শুরু

বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে শুরু হলো ‘সাংগ্রাইং’ উৎসব। ‘প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক, শান্তির দূত পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়’ এই স্লোগানে সামনে রেখে বান্দরবানে চারদিন ব্যাপী বান্দরবান পাহাড়ী অঞ্চলে শুরু হচ্ছে সাংগ্রাই পোয়ে।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ৯টায় মারমা, ম্রো, খেয়াং ও খুমিদের সর্ববৃহৎ সামাজিক এ উৎসব শুরু হয়।

দিনটি উপলক্ষে নিজেদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি পোশাক পরিধানে অনুষ্ঠানের সারিবদ্ধভাবে হাতে ফেস্টুন, প্লেকার্ড ও গানের সুর, তাল মিলিয়ে বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউ হলরুমে এসে সমাবেত হয়। এসময় জেলা বসবাসরত ১১ টি সম্প্রদায়ের জাতিগাষ্ঠী অংশ নেন। তারপর শুরু হয় গুরুজনদের বয়ােজ্যেষ্ঠ পুজা।

শোভাযাত্রা অংশগ্রহণকারী জুলিপ্রু মারমা, এমেচিং মারমা, মেসাইচিং মারমাসহ কয়েকজন তরুণী জানান, বছর পেরিয়ে আবারও এসেছে মারমা সম্প্রদায়ে সামাজিক উৎসব মহা সাংগ্রাইং পোয়েঃ। সব ভেদাভেদ ভুলে আমরা নতুন বছরকে বরণ করে নেব। সবচেয়ে মূল আর্কষণ রাজার মাঠে অনুষ্ঠানে জাতি বর্ণ নির্বিশেষে জলকেলিতে একসাথে আন্দন করবো।

আরেক তরুণী রুপালী ত্রিপুরা বলেন, পাহাড়ে সাংগ্রাইং উৎসব মানেই এক ধরণে মিলন মেলাতে পরিণত হয়। এই সাংগ্রাই উৎসবকে ঘিরে শোভাযাত্রায় বান্দরবানে বসবাসরত সব জাতি গোষ্ঠী একযোগে অংশ করতে পেরে কি যে আনন্দ লাগচ্ছে তা বলার ভাষা নেই।

এসময় সকলকেই সাংগ্রাইং এর শুভেচ্ছা জানিয়ে বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, একদিন আগেই ঈদুল ফিতর পালন করলাম, আমাদের পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী আছি, তারা প্রত্যেকেই নববর্ষ পালন করে।

তিনি আরও বলেন, প্রার্থনা করি এই নববর্ষে অতিতের ভুল ভ্রান্তি গ্লানি দুঃখ কষ্টকে মুছিয়ে একটা সুন্দর সকাল পাবো, যে দিন থেকে আমরা আগামী পুরো বছরটাকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আমরা একটি স্মার্ট বাংলাদেশ পাবো। সম্প্রীতির ভাতৃত্বের বন্ধনে অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনায় আমরা আগামীতেও এগিয়ে যাবো।

আয়োজকরা জানান, উছ্বাস-উদ্দীপনায় মধ্য দিয়ে আবারও পাহাড়ে শুরু হচ্ছে চারদিন ব্যাপী বান্দরবানে সাংগ্রাইং উৎসব (পায়ে:)। আগামীকাল বৌদ্ধ বিহারে ফুল পূজা, ছোয়াইঃ প্রদান (আহার), বুদ্ধমুর্তি স্নান, ধর্ম দশনাসহ ইত্যাদি। পরের দিন ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে দুপুরে মূল আকর্ষণ সাংগ্রাইং পানি মৈত্রীবর্ষণ (জলকেলি) উৎসবে অংশ নেবে সকল সম্প্রদায়ে নারী-পুরুষরা। পাশাপাশি পাহাড়িদের ঐহিত্য খেলাধুলা ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় শুরু হবে পিঠা তৈরি উৎসব।

উৎসবকে ঘিরে যেকোনো পরিস্থিতিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন।

Exit mobile version