বান্দরবানে সেনাবাহিনীর পাল্টা জবাবে নিহত কেএনএফ সন্ত্রাসীর লাশ পরিবারে হস্তান্তর

fec-image

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাথে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর মধ্যে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় ৩ কেএনএফ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এক পর্যায়ে পাহাড় তল্লাশি চালিয়ে গুলিতে নিহত এক কেএনএফ সন্ত্রাসীর লাশ ও অস্ত্রসহ গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সন্ত্রাসী বেনেট থাং ম্রো (১৮) এর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।

ছেলের লাশ গ্রহণ করেন পিতা লিপমাং ম্রো ও মাতা লাল বিয়াক জিং ম্রো। নিহত বেনেট থাং ম্রো বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির শ্যারন পাড়ার বাসিন্দা ।

লাশ গ্রহণ করার আগে নিহত কেএনএফ সদস্য বেনেট থাং ম্রো’র পিতা লিপমাং ম্রো সাংবাদিকদের জানান, ছেলে বেনেট উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের হয়ে ছোট বেলা থেকে বেড়ে উঠেন। গত দুই বছর আগে বেনেট ঝগড়াঝাটি করে মুখে ঘুষি মেরে তার দাঁত ভেঙ্গে দেয়। তার পর তিনি রাগের মাথায় বেনেটকে ঘর ছেড়ে চলে যেতে বলে। এঘটনার পর বেনেট রাগ করে ঘর ছেড়ে চলে যায়। গত বছর শুনতে পাই ছেলে বেনেট পাহাড়ে নতুন গঠিত সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর দলে চলে গেছে। তাকে দল ছেড়ে চলে আসার জন্য বিভিন্নভাবে অনেক বুঝানো হয়েছে, কিন্তু সে আমাদের কথা শুনেনি। সে ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে আমাদের সাথে আর দেখা সাক্ষাতও করেনি। গতকাল রবিবার পাড়ার লোকজন মোবাইলে তার ছেলে বেনেটের লাশ দেখায়। তিনি আরো জানান, তার ছেলে বেনেট অনেক দিন লামা সুয়ালক সড়কে ভাড়ায় সিএনজি চালিয়েছিল। কিছু বিপদগামী লোকের পাল্লায় পড়ে ও তাদের কুমন্ত্রণায় সে সন্ত্রাসী দলে যোগ দিয়েছে। পাড়ার যুবকদের তিনি বিপদগামী লোকের পাল্লায় না পড়ে ও তাদের কুমন্ত্রণা থেকে সাবধান থেকে সন্ত্রাসী দলে যোগ না দেয়ার আহবান জানান। লিপমাং ম্রোও লাল বিয়াক জিং ম্রো দম্পতির ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে এবং নিহত বেনেট দ্বিতীয়।

উল্লেখ্য যে, বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার দুর্গম মুন্নম পাড়া, আরথা পাড়া ও মুলফি পাড়া এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে কেএনএফ এর শসন্ত্র সদস্যরা অবস্থান নিয়ে এসব পাড়ার লোকজনের উপর জুলম, অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে। কেএনএফ সন্ত্রাসীদের অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে ইতোমধ্যে পাড়ার ৫২ পরিবার বাড়ি ঘর ছেড়ে উপজেলা সদরে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। বিষয়টি খবর পেয়ে রুমা সেনাজোনের একাধিক দল গত ৩ দিন ধরে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালানার সময় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর উপরে অতর্কিত গুলি চালায়। এসময় সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দিলে সেনাবাহিনীর সাথে কেএনএফ সদস্যদের ব্যাপক গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে কেএনএফ সদস্যরা পালিয়ে যায়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কেএনএফ, বান্দরবান, লাশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন