বান্দরবানে সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে প্রশাসনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

fec-image

প্রতিদিন সড়কে ঝরছে প্রাণ আর খবরের কাগজে ভেসে উঠছে বীভৎস সব লাশের ছবি। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর যেন আমাদের গা-সহা হয়ে গেছে। ফলে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ ঝরলেও তা আমাদের মনকে আবেগতাড়িত করে না।

সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে বান্দরবানে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রীতির বৃক্ষরোপণ নামে বিশেষ কর্মসূচির আওতায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে বান্দরবান সদর থেকে থানছি পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে লাগানো হচ্ছে নানা জাতের গাছ।

পাহাড় এবং শঙ্খ ও সাঙ্গু নদীর উৎপত্তিস্থলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখার জন্য বান্দরবানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। আঁকাবাঁকা, উঁচুনিচু পাহাড়ি পথ আরো আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। তবে এখানকার অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। এসব কেন্দ্রে ভ্রমণে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন পর্যটকরা।

মূলত এসব পথের এক পাশে পাহাড় থাকলেও অপর পাশটি গভীর খাদ। একেকটি খাদের গভীরতা একশ থেকে দেড়শ মিটার। ফলে চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়ি পড়ে যাচ্ছে গভীর খাদে। তাই যানবাহনের খাদে পতন ঠেকাতে জেলা প্রশাসন বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে।

দেশে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ওভারটেকিং প্রবণতা। সাধারণত রাস্তায় ধীরগতির গাড়িগুলোকে ওভারটেকিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। এ সময় হর্ন বাজিয়ে সামনের গাড়িকে সংকেত দিতে হয়। কিন্তু অনেক সময় সংকেত না দিয়ে একজন আরেকজনকে ওভারটেক করার চেষ্টা করে, যার ফলে সামনের দিক থেকে আসা গাড়ি বের হতে না পেরে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তাই সঠিক নিয়ম মেনে সতর্কতার সঙ্গে ওভারটেক করা উচিত।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজিম উদ্দিন জানান, ট্রাফিক আইন অমান্য করার কারণেও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই আমাদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা আরও উন্নত করতে হবে। সড়ক-মহাসড়কগুলোকে ডিজিটাল নজরদারির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

বান্দরবান বিআরটিস কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনে সরকার, চালক, মালিক, শ্রমিক ও যাত্রী সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তাই আমার সড়ক দুর্ঘটনা রোধে অনিবন্ধিত সকল গাড়ির ও চালকের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত রেখেছি ।

৩ হুইলার ও টম টম মাহেন্দ্র গাড়ির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম জানান, মূলত এসব পথের এক পাশে পাহাড় থাকলেও অপর পাশটি গভীর খাদ। একেকটি খাদের গভীরতা একশ থেকে দেড়শ মিটার। ফলে চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়ি পড়ে যাচ্ছে গভীর খাদে। তাই সকল চালকদের সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

বান্দরবান জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সকলকে সচেতন হতে হবে এবং সকল নিয়ম কানুন মেনে গাড়ি চালাতে হবে।

এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দীর্ঘ ৯০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথে লাগানো হচ্ছে নানা জাতের গাছ। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঠেকাতে সম্প্রীতির বৃক্ষরোপণ বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।

এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: প্রশাসন, বান্দরবান, ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন