বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন শহীদ সৈনিক তৌহিদুলের মা

fec-image

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি–চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের বোমা (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস–আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিতে নিহত সেনাসদস্য তৌহিদুল ইসলামের রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাড়িতে চলছে মাতম। ছেলের নাম ধরে বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নাসিমা বেগম।

তৌহিদুল ইসলাম বাগমারা উপজেলার নরদাশ গ্রামের মহসিন আলীর দুই সন্তানের মধ্যে ছোট। বুধবার বিকেলে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনেরা কাঁদছেন। প্রতিবেশীরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তৌহিদুল ইসলামের বড় বোনের কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়ে গেছে। ২০২০ সালে সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে যোগ দেন তৌহিদুল। এর পর থেকে প্রতি মাসে টাকা পাঠাতেন। তাঁর আয়েই চলছিল সংসার।

ছেলের নাম ধরে কাঁদতে কাঁদতে নাসিমা বেগম বলেন, ‘আমার বাবায় গত ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসছিল। ছুটি শেষ হওয়ার আগেই চইল্লা যায়। আজ শুনি, বাজান আর নাই। আমি কী নিয়া বাঁচব।’ বিলাপ করতে করতে চেতনা হারিয়ে ফেলেন নাসিমা বেগম।

পরিবারের বরাত দিয়ে নরদাশ ইউনিয়ন (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার বলেন, গতকাল বান্দরবান সেনানিবাস থেকে তৌহিদুল ইসলামে মৃত্যুর খবরটি মুঠোফোনে পরিবারকে জানানো হয়। এর পর থেকে ওই বাড়িতে মাতম চলছে।

স্থানীয় হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আফজাল হোসেন বলেন, স্থানীয়ভাবে তিনি সেনাসদস্য নিহত হওয়ার খবর জেনেছেন। তবে সরকারিভাবে কোনো তথ্য আসেনি।

বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বান্দরবানের রুমা উপজেলার জারুলছড়িপাড়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল গতকাল ওই স্থানে অভিযানে যাচ্ছিল। টহল দলটি জারুলছড়িপাড়ার ছড়ার কাছে পৌঁছালে বেলা ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএ সদস্যরা বোমা (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে দুজন কর্মকর্তা ও দুজন সৈনিক আহত হন। তাঁদের দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যান। তবে তাঁদের নাম–পরিচয় জানায়নি আইএসপিআর।

  • সূত্র: প্রথম আলো
Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি, কেএনএ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন