বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে গিয়ে শেষ রক্ষা হল না আসাদুজ্জামানের

fec-image

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) পেকুয়ার শীলখালী ইউনিয়ন শাখার নেতা আসাদুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বিএনপি ছেড়ে শীলখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়ে প্রত্যক্ষ বিপুল ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

গত শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকালে শীলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাংগঠনিক প্রধান রেজাউল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মজিবুর রহমান, চকরিয়া – পেকুয়া আসনের সাংসদ আলহাজ্ব জাফর আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম গিয়াস উদ্দিন, উম্মে কুলছুম মিনু, এটি এম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জিয়া, লায়ন কমর উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) শহিদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সহ অসংখ্য নেতারা।

সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই সভাপতি প্রার্থী কাজীউল ইনসান, হানে আলম, নুরুল আলম, আসাদুজ্জামান আর সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী ভুট্টো, বেলাল উদ্দিনসহ প্রার্থীদের কে মঞ্চে নিয়ে আসেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মজিবুর রহমান। এ সময় তিনি সভাপতি পদ প্রার্থীদেরকে জন প্রতি জয় বাংলা শ্লোগান দিতে বলেন। জয় বাংলা শ্লোগান ট্রেনিং এ প্রত্যকেই জয় বাংলা শ্লোগান দেয়। কিন্তু নির্বাচিত সভাপতি বিএনপির সাবেক নেতা আসাদুজ্জামান চৌধূরী তিনি জয় বাংলা শ্লোগান দিতে গিয়ে নতুন শ্লোগান রচনা করেন “জয় জয় বাংলা জয় জয় শেখ মুজিব” মঞ্চে উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য অতিথিরা শুনেন। তার নতুন শ্লোগান শুনে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মজিবুর রহমান।

এ দিকে এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে তোলকালাম শুরু হয় পুরো কক্সবাজারসহ সর্বত্রে। নজরে আসে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মজিবুর রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের। তাৎক্ষনিক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানের নিজস্ব ফেইসবুকে পেইজে লিখেন “কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শীলখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে শুক্রবার আসাদুজ্জামান চৌধূরীকে সভাপতি নির্বাচিত করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভাবে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া আমাদের কাছে অভিযোগ আছে ওই কমিটিতে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। যা খুবই দু:খজনক। ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শক্রমে জেলা আওয়ামী লীগ বিতর্কিত এ কমিটি বাতিল ঘোষণা করেছে বলে তিনি তার টাইমলাইনে লিখেছেন”। এদিকে কমিটি নির্বাচিত হওয়ার ২৪ ঘন্টা পার হতে না হতে নবনির্বাচিত এ কমিটি বাতিল করে জেলা আওয়ামী লীগ।

এদিকে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে জানা গেছে আসাদুজ্জামান চৌধুরী কালো টাকা দিয়ে ভোট কিনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। কালো টাকার কাছে হেরে গেলেন ত্যাগী নেতারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠিকে থাকতে পারলেন না। বি এন পির থেকে ছুড়ে এসে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের হাল ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না তার। অনেক নেতাকর্মীরা বলেছেন ইউনিয়ন ও উপজেলা নেতাদের কে ম্যানেজ করে উঠে এসে জুড়ে বসতে চেয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কমিটি বাতিল হয়ে গেলো।

এদিকে তথ্যসূত্রে জানা যায়, তিনি শীলখালী ইউনিয়ন যুবদলের ১৫ নং সদস্য, বি এনপির সাংগঠনিক টিমের ৮নং সদস্য, শীলখালী ইউনিয়ন বি এন পির ২০১৮ সালের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ৯৩ নং সদস্য, ২০১২ সালের বিএনপির সম্মেলনের পোষ্টারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন। তিনি বিএনপির পোষ্টার ধারী নেতা। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ শীলখালী ইউনিয়রে আওয়ামী লীগের ২ নং ওয়ার্ড থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর প্রাথমিক সদস্যপদ সনদপত্র নেন। তিনি ওই এলাকার হেদায়তাবাদের মৃত ডা: মনিরুজ্জামান চৌধুরীর পুত্র। আসাদুজ্জামান চৌধুরী ২০১৫ সালে যদি আওয়ামী লীগের সদস্য হয়ে থাকেন কেন তিনি শীলখালী ইউনিয়ন বি এন পির ২০১৮ সালের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ৯৩ নং সদস্য হলেন। তা বুঝা দায়ী হয়ে উঠেছে।

এদিকে তিনি নির্বাচিত হয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও সোশাল মিডিয়ায় কৃতজ্ঞতা ও কিছু কথা বলে নানা তথ্য এবং জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেন।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য নাছির উদ্দিন বাদশা তার ফেইসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন তিনি ২০১৫ সালে কখন ও পেকুয়ায় ছিলেন না এবং আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত নই তবে ৩১/০৩/২০২০ সালে আওয়ামীলীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করেই পরিচয় দিয়ে করোনাকালীন অসহায় মানুষের পাশে তখন ছুটে গিয়েছিলেন তখন হতে তিনি আওয়ামীলীগ নেতা দাবী করে আসছে। তার প্রাথমিক সদস্য পদের ফরম তা প্রকাশ করলেই বুঝা যাবে তিনি কেমন আওয়ামী লীগ সদস্য। ভিত্তিহীন বানোয়াট। তিনি কাউন্সিলর ও ছিলেন না। তিনি যদি প্রকৃত আওয়ামীলীগের সদস্য হয় তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত বিতর্ক কেন? তাকে একটি মহল মিথ্যা আশ্রয়ে উপর ভর করে শিলখালী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের পদ দখলের জন্য পরিকল্পনা করেছিল তাহা তৃণমূল নেতাকর্মীর মাঝে ভূয়া হিসেবে প্রকাশ পেয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিতর্কিত কমিটি বাতিল করেছেন। তাকে কে প্রাথমিক সদস্য পদ দিয়েছেন বলে দাবীদার করা হচ্ছে তিনি ও আরেক বিতর্কিত লোক এবং বিগত সময়ে শিলখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে পথে বসাই রেখে তিনি পলাতক হয়ে দেশান্তরিত হয়েছিলেন তা কারো অজানা নই। সুতরাং বিতর্কিত বাতিল।।

এ বিষয়ে জানতে বাতিল কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি আসাদুজ্জামানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মজিবুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভাবে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয় ওই কমিটি নিয়ে। তাছাড়া আমাদের কাছে অভিযোগ আছে ওই কমিটিতে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। যা খুবই দু:খজনক। ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শক্রমে জেলা আওয়ামী লীগ বিতর্কিত এ কমিটি বাতিল ঘোষণা করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন