বিচারপতি আনোয়ার উল হক পার্বত্য ভূমি কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান: রোববার খাগড়াছড়ি আসছেন
পার্বত্যনিউজ প্রতিবেদক :
সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক’কে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিস্পত্তি কমিশন‘র (ল্যান্ড কমিশন) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
তিনি ভূমি নিস্পত্তি কমিশন‘র ৬ষ্ট চেয়ারম্যান হিসেবে বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী‘র স্থলাভিষিক্ত হবেন।ভূমি মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব মুর্শিদা শারমিন স্বাক্ষরিত এক স্মারক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এদিকে দায়িত্বভার গ্রহনের পরপরই সদ্য নিযুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিস্পত্তি কমিশন‘র (ল্যান্ড কমিশন) চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক আগামী রোববার তিন দিনের সফরে খাগড়াছড়ি আসছেন। তিনদিনের সফর শেষে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার উদ্দেশ্যে খাগড়াছড়ি ত্যাগ করবেন।
জানা গেছে, কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্রগ্রামের দীর্ঘ দিনের ভুমি সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন।
তারও আগে ২০০৯ সালের ১৯ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিস্পত্তি কমিশন‘র (ল্যান্ড কমিশন) ৫ম চেয়ারম্যান হিসেবে সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো: খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ২০১২ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সচিব মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘সফরকালে কমিশনের অন্য সদস্য, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে স্বাক্ষাৎ করবেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিস্পত্তি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ৩ জুন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আনোয়ারুল হক চেীধুরীকে কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি কার্যভার গ্রহনের আগে মৃত্যু বরণ করেন। অত:পর ২০০০ সালের ৫ এপ্রিল নিয়োগ দেয়া হয় বিচারপতি আব্দুল করিম-কে। তিনি ১২ জুন ২০০০ সালে দায়িত্বভার গ্রহন করে একবার খাগড়াছড়ি সফরে আসেন। তারপর তিনি শারিরীক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর প্রায় দেড় বছর চেয়ারম্যান পদ শূণ্য থাকার পর ২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর চার দলীয় জোট সরকার বিচারপতি মাহমুদুর রহমানকে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। টানা দুইবার দায়িত্ব থাকা অবস্থায় তিনিও ২০০৭ সালে নভেম্বর মাসে মারা যান। এরপর তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আর কোন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়নি।
আওয়ামীলীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালের ১৯ জুলাই বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চেীধুরীকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিস্পত্তি কমিশন’র চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। তিনি ২০১২ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত তিনি দ্বায়িত্ব পালন করেন। এরপর প্রায় দুই বছর পরে বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়াউল হক’কে কমিশনের ৬ষ্ঠ চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির “ঘ” এর ৪ ধারা মোতাবেক জায়গা-জমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান করে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিস্পত্তি কমিশন (ল্যান্ড কমিশন) গঠনের বিধান রয়েছে। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন সার্কেল চীপ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), পার্বত্য জেলা পরিষদ‘র চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার।
এ সংক্রান্ত আরো খবর:
- কি ঘটবে পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন সংশোধন প্রস্তাব কার্যকর হলে?
- অবশেষে মন্ত্রী সভায় অনুমোদিত হলো বহুল বিতর্কিত পার্বত্য ভূমি কমিশন সংস্কার আইন
- আজ মন্ত্রীসভায় উঠছে বহুল বিতর্কিত পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন সংশোধনী প্রস্তাব
- ভূমি কমিশন আইন সংস্কার: আদালতের কার্যপরিধি খর্ব হওয়ার আশংকা
- ক্ষমতা হ্রাস করা হচ্ছে পার্বত্য ভূমি কমিশন চেয়ারম্যানের
- পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ ও প্রেক্ষাপট শান্তির সম্ভাবনা
- অবশেষে মন্ত্রী সভায় অনুমোদিত হলো বহুল বিতর্কিত পার্বত্য ভূমি কমিশন সংস্কার আইন
- ভূমি কমিশন আইন পাশের নামে পাবর্ত্য অঞ্চলে শান্তি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে- খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি
- পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন আইন সংশোধনী- ২০১৩ একটি সংবিধান রাষ্ট্র ও গণবিরোধী আইন- ওয়াদুদ ভুঁইয়া
- এবার পাহাড়ীরাও বিরোধিতা করলো ভূমি কমিশন আইন সংশোধনীর
- ভূমি কমিশন সংশোধনী আইন- ২০১৩ বাতিল না হলে ২- ৫ জুলাই তিন পার্বত্য জেলায় টানা ৯৬ ঘণ্টা হরতাল
- ভূমি কমিশন আইন সংশোধনে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার খর্ব